জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে জীবন থেকে নেয়া কাহিনী অবলম্বনে রচিত ছোট গল্প 'সাগর নদীর কাছে উত্তর খোঁজে'।

আপডেট: ১০ অগাস্ট ২০২৩, ০৯:৪৭

সাগর নদীর কাছে উত্তর খোঁজে

 

অচিনপুরের বাসিন্দা সাগর সরকার। বাবার ছেলে হিসেবে ভিটে বাড়ীটা ছাড়া কোন কিছুই সে পায়নি। ছোট বয়সেই বাবা মাকে হারিয়ে অনাথ শিশুটি মানুষের দয়ার উপর জীবন নিয়ে বেচে থেকেছে। মনে ভরা আফসোস আর ব্যথা নিয়ে জীবন যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে ছুটেছে ধন উপার্জনের পিছনে।
কেউ বলে ভাগ্য, আবার কেউ বলে বাবা মায়ের দোয়া, আবার কেউ বলে তার নিরলস পরিশ্রমের ফলে সে এখন সম্পদশালী হয়েছে। অর্জিত সম্পদই সে অনাথকে সমাজে জায়গা করে দিয়েছে। তারপর সাগর সরকার সংসার ধর্ম পালন করে অনেকের মত সেও জীবনে সফল হয়েছে।

জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় এসে সাগর সরকারের মনে হচ্ছে -সারা জীবনের কষ্টার্জিত সব অর্জন যার জন্য সে নিজেকে সফল মনে করে আত্মতৃপ্তিতে ডুবে ছিল সব তা বৃথা। সারা জীবনভর ছুটাছুটি করে যা কিছু অর্জন করেছে তার কিছুই নিজের জন্য না।
কেউ যদি সূর্যোদয়ের সাথে সাথে পার্থিব তাড়নায় কোন এক অজানা গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য দৌড়তে শুরু করে, দৃষ্টি কেবল সামনে আর চারপাশে, মাঝে মাঝে শুধু আশে পাশে দৌড়নো অন্যান্যদের সাথে তুলনা করে তার অর্জনের পরিমাণটা দেখে দেখে নেয়। সে যদি বেলা শেষে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে শরীরের সব জোর হারিয়ে যাওয়াই নিজের পায়ের দিকে দৃষ্টি দিয়ে যদি বোঝে যে সারা বেলা দৌড়াদৌড়ি করেও একটুও এগোয়নি, এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে, তখন তার যে মনের অবস্থা যেমন হয় এ বয়েসে পৌঁছে সাগর সরকারেরও সেই একই অবস্থা।

মফঃস্বল শহরে সাগর সরকার ভাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে সেগুলোতে ছেলেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কাউকে কাজে না লাগিয়ে কর্মচারীদের দিয়ে সব পরিচলনা করেছে।
তার প্রথম সন্তান, বড় মেয়েটাকে লেখাপড়া শিখিয়ে ভাল ধনী শিক্ষিত পাত্রের সাথে বিয়ে দিয়েছে। তারপর পর পর চারটি ছেলেকে নিজের কাছে না রেখে দূর শহরে পাঠিয়ে ভাল স্কুল কলেজে লেখাপড়া শিখিয়ে জীবনে অনেক উঁচু আসনে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল সাগর সরকার। ছেলেদেরকে সব সময় বাবার সম্পদের দিকে না তাকিয়ে নিজেদের ভাল ভাবে গড়ে নিয়ে উন্নত জীবন যাপনের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছে।
ছেলেরা সবাই বিভিন্ন নামি দামী ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে ইতিমধ্যেই দেশ বিদেশে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে স্বাছন্দে জীবন যাপন করছে। বাবার উপার্জনে তাদের প্রয়োজন ফুরিয়েছে। কালেভদ্রে খবরাখবর রাখার ভিতরেই বাবার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখেছে সন্তানেরা।
সাগর সরকার তাতেই তৃপ্ত। ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশী কিছু সে কোনদিন আশা করিনি। বছর পাচেক আগে তার স্ত্রী বিয়োগের পর ছেলেমেয়েরা এসে কান্নাকাটি করে ফিরে যাওয়ার পর ওদের কারোরি এদিকে আসার প্রয়োজন পড়েনি।
সাগর সরকার এখন মফঃস্বল শহরে নিজ বাড়ীতে একাকী বসবাস করছে। তার ব্যবসার কর্মচারীদের সেবা শুশ্রূষায় জীবন কাটাছে তার।

স্ত্রীর মৃত্যুর বছর তিনেক আগে তার অটো রাইচ মিলে একটা দুর্ঘটনায় তার একজন বিশ্বস্ত কর্মচারী রতন প্রাণ হারায়। কর্মচারীটি সাগর সরকারের মেঝ ছেলের বয়সের হবে। অটো রাইচ মিলের চাকরী নেয়ার পর সে বিয়ে করে সংসার পেতেছিল। কারখানা এলাকায় একটা ছোট ঘর ভাড়া করে থাকতো ওরা। ওদের চার বছরের একটা ছেলে নিয়ে সংসার।
রতনের অকাল মৃত্যুতে পরিবারটি একেবারে রাস্তায় বসে পড়ে। তখন সাগর সরকার তার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে মৃত কর্মচারীর ছেলে সহ ওর বউ করিমনকে তার নিজের বাড়ীর মুল বিল্ডিং থেকে আলাদা একটা ঘর ঠিকঠাক করে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে।
সাগর সরকারের স্ত্রী, শাপলা সরকার অল্প বয়সী বিধবা করিমনকে মাতৃ স্নেহে বরন করে তাকে আর ছেলে করিমের ভরন পোষণের ভার গ্রহণ করে। অনাথ ছেলেটিকে স্কুলে ভর্তি করে দেয়। শাপলা সরকারের একাকী জীবনে বিধবা করিমন আর তার ছেলে করিম হয়ে ওঠে সব ধরনের পরিকল্পনার বিষয়।
ছেলেমেয়েরা সে সব জানতে পেরে তাদের সব বন্ধু বান্ধন আত্মীয় পরিজনদের কাছে ঢাক ঢোল পিটিয়ে সে কথা প্রচার করে নিজেদেরকে মহানুভব বাবা মায়ের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে সমাজে বিশেষ সন্মানের স্থান দখল করার প্রতিযোগিতায় নামে।
তাদের মেঝ ছেলে যে তার পরিবার নিয়ে বিদেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে সে দেশের স্থানীয় একটি টেলিভিশনের চ্যানেলের মাধ্যমে তার বাবা মা, করিমন আর তার ছেলেকে নিয়ে একটা সল্প দৈর্ঘ্য প্রামান্য চিত্র তৈরি করিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।
তাদের নাতি পোতারাও মাঝে মাঝেই দাদা দাদিকে টেলিফোন করে করিমন আর করিমের ছবি পাঠানোর অনুরোধ করে। তারাও তাদের দাদা দাদিদের এ মহানুভবতার কথা বিভিন্ন সোসাল মিডিয়াতে প্রকাশ করে নিজেদের মুখ উজ্জ্বল করতে চায়।
এ ঘটনার কয়েক বছর পর সাগর সরদারের স্ত্রী মারা যায়।
স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সাগর সরকার ছেলেটির ভার নিজ কাধে তুলে নেয়। এ বার্ধক্যে এসে অনাথ করিমই হয়ে ওঠে তার একাকীত্বের সাথি। সাগর সরকারের স্ত্রী বেচে থাকতেই করিম তাদেরকে দাদু দাদি বলে ডাকে। স্ত্রী বিয়োগের কিছুদিন পর সাগর সরকার করিমনকে তার ছেলে সহ মুল বাড়ীতে খালি পড়ে থাকা একটা রুমে থাকার বন্দোবস্ত করে।

সাগর সরকারের শরীর ভেঙ্গে পড়ায় এর মধ্যে বেশ কয়েকবার ছেলেমেয়েদের সময় করে এসে সব সম্পত্তি দেখে শুনে নেয়ার জন্য বলেও কোন ফল হয়নি। সন্তানেরা নানা কাজের অজুহাতে সময় করে উঠতে না পারায় আসতে পারেনি।
করিম মেধাবী ছেলে, সে সাগর সরকারের পরিচয়ে স্কুলে ভর্তি হয়ে ইতিমধ্যেই ভাল রেজাল্ট করে ম্যাট্রিক পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে। করিমের কলেজে যাতায়াতের জন্য সাগর সরকার একটা গাড়ী কিনে দিয়েছে।

সাগর সরকারের শরীর একদম ভাল যাচ্ছে না, তাই এরই মধ্যে কি একটা চিন্তা করে সাগর সরকার তার পারিবারিক উকিলকে ডেকে পাঠাল।
উকিল কোন এক কাজে তখন শহরের বাইরে ছিল এবং ফিরতে বেশ দেরী হবে বলে জানিয়ে তাকে ডাকার কি কারণ আর বিশেষ কোন তাড়া আছে কিনা জানতে চায়ল। ছেলেমেয়েদের ব্যস্ততার জন্য তাদেরকে ডাকলেও ব্যস্ততার কারণে তাদের আসতে না পারা আর তার শরীর ভাল নেই উল্লেখ করে উকিলকে কাজ শেষ করেই যথা দ্রুত সম্ভব ফিরে দেখা করার কথা বলল সাগর সরকার।

উকিলকে ডাকার বিষয়টা কি করে তার ছেলেমেয়েদের কানে গেল সেটা বলা মুস্কিল। তবে এ ঘটনার কয়েকদিনের মধ্যেই ছেলেমেয়েরা যখন তখন টেলিফোন করতে শুরু করল। মাঝে মধ্যে তার নাতি পোতারাও টেলিফোন করতে লাগলো ঘন ঘন।
সরাসরি কেউ কোন কথা জিজ্ঞেস করল না। তবে সাগর সরকারের শরীর স্বাস্থ্যের ব্যাপারে তারা যে তেমন উদ্বিগ্ন নয় বরং উকিলকে ডাকার কারণ জানতে উদগ্রীব সেটা পরিষ্কার হল।
এই প্রথম নাতি পোতারা এই বলে অভিযোগ করতে শুরু করল যে, তাদেরকে দাদা দাদির আদর থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সে আদর তারা করিম নামে একজন অনাত্মীয় অনাথকে দিয়েছে বলেও অভিযোগ করে বিষয়টা তাদেরকে খুব ব্যথিত করে বলেও জানালো।
ছেলেমেয়েদের কথার ফাকে ফাকে তাদের অভিযোগ গুলোও পরিষ্কার হয়ে উঠতে লাগল দিনে দিনে। সরাসরি না বললেও তাদের কথায় বাবার সম্পত্তি অনাথ করিমকে দিয়ে দেয়া মস্তবড় অন্যায় বলে তারা নানা ভাবে অসুস্থ বাবাকে স্মরণ করিয়ে দিল।
সাগর সরকার এ সব প্রশ্ন বা মন্তব্যের বিশেষ কোন উত্তর না দিয়ে চুপচাপ সব শুনে যেতে লাগলো। ছেলেমেয়ে নাতি পোতাদের এহেন মনোভাবে অবাক হল সাগর সরকার। এত বছর নিরব থাকার পর নিচক একটা সন্দেহের উপর ভিত্তি করে তারা সবাই সরব হয়ে উঠল সেটা ভেবে ভেবে সাগর সরদার খুব ব্যথিত হয়ে উঠল।

এ সময়ে সাগর সরকারের শরীর খুব খারাপ হলে করিমন আর তার ছেলে করিম এ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল। ডাক্তার তাকে পরীক্ষা করে ভর্তি হতে বলায় সাগর সারদার পরিষ্কার ভাবে তার তীব্র অনিচ্ছার কথা ব্যক্ত করল।
-মরণ তো আসবেই, আর ঠিক সময়েই সেটা অবধারিত ভাবে ঘটবে। সে কথা বলে সাগর সরকার তার নিজের হাতে গড়া বাড়ীতে তার স্মৃতি ঘেরা সব কিছুর সান্যিদ্ধে থেকে মরতে চায় বলে জানালো।
ডাক্তার তার কথা মেনে নিলেও তাকে নিয়ম মাফিক ওষুধ পথ্য খাওয়া আর পুরোপুরি বিশ্রাম নেয়ার জন্য পরামর্শ দিল।
টেলিফোনে কথা বলা পুরোপুরি নিষেধ করল ডাক্তার এবং কোন রকম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি কঠোর ভাবে এড়িয়ে চলার জন্যও বলল।
বাড়ীতে ফেরার পর করিমন আর করিম সাগর সরকারকে নিয়ম মত ওষুধ খাওয়া, সময় মত খাওয়া গোছল আর বিশ্রামের সব কিছু দায়িত্ব নিয়ে ডাক্তারের কথা মত সব করতে লাগল।
ডাক্তারের পরামর্শে সাগর সরকারের কাছ থেকে সেল ফোনটা নিয়ে ওরা নিজেদের কাছে রাখল।
ছেলেমেয়েদের টেলিফোন ধরে ওরা মা ছেলে সাগর সরকারের স্বাস্থ্যের কথা জানিয়ে তার শারীরিক দুর্বলতার জন্য টেলিফোনে কথা বলা নিষেধ বলে জানাল।
আরো জানাল যে, তিনি মাঝে মধ্যেই বিছানায় প্রস্রাব পায়খানা করছেন, সে গুলো ঠিকঠাক মত ধুয়ে মুছে তারা মা বেটা মিলে তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য চেষ্টা করছে। নিয়মিত ডাক্তার এসে দেখে যাচ্ছে বলেও তারা ছেলেমেয়েদেরকে দুশ্চিন্তা না করার জন্য বলল তাদেরকে অভয় দিল।

প্রায় মাস খানেক বিছানায় পড়ে থেকে সাগর সরকার ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠতে লাগল। এ সময় করিম আর তার মা সব সময় তাকে সঙ্গ দিতে লাগল। ডাক্তারের পরামর্শে সাগর সরকার ঘরের ভিতর আর বাড়ীর লনে একটু হাটাচলাও করতে লাগলো।
করিমকে বলে সাগর সরকার উকিল ফিরেছে কিনা টেলিফোনে জেনে, ফিরলেই তাকে যথা দ্রুত সম্ভব আসার জন্য ডেকে পাঠাল।

-এ সমস্ত কি বলছেন আপা মনি, এ যে পাপের কথা। এগুলো কথা মুখেও আনবেন না।
করিমন আর তার ছেলে যে রুমে থাকে সে রুমের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় করিমনের গলা শুনে থমকে দাড়াল সাগর সরকার।
করিমন টেলিফোনে কথা বলছে সাগর সরকারের বড় মেয়ের সাথে। পরিষ্কার ভাবে বুঝল সে।
জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখল পাশে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে অশুশিক্ত চোখে নিজ বুকে মুখ গুজে অপরাধির মত দাঁড়িয়ে করিম।
-আমি আপনার বয়সের অনেক ছোট, আর সরকার বাবাকে আমি বাবার মত শ্রদ্ধা করি। তিনিও আমাকে সে চোখেই দেখেন।
কাঁদতে কাঁদতে কথাটা বলে থামল করিমন।
-সরকার বাবার শরীরের এ অবস্থায় আমরা তাকে ছেড়ে কি ভাবে যায়, এ কি সম্ভব? আর আমরা এ অবস্থায় যাবই বা কোথায়?
করিমনের মরমে আঘাত পাওয়া অসহায়ত্বের কান্নার স্বরটা পরিষ্কার হয়ে উঠল।

একি করছে তার ছেলেমেয়েরা! তার কষ্টের সব উপার্জন ঢেলে দিয়ে ছেলেমেয়েদেরকে জীবনে প্রতিষ্ঠা করে এ কি বিনিময় তারা দিচ্ছে! এত ছোট মনের অধিকারী ওরা হল কিভাবে!

সাগর সরকার কাকে বলবে সে এসব কথা! এক মুহূর্তে জীবনের অর্থ উল্টোপাল্টা হয়ে গেল তার কাছে। জীবনটাকে একটা বিভীষিকাময় নষ্ট বিষাক্ত অধ্যায় বলে মনে হল।
আকাশটা যেন হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ল তার মাথার উপর। জীবনের উপর ঘৃণা জন্মে বেচে থাকার ইচ্ছেটা একদম শেষ হয়ে গেল সাগর সরকারের।
দাঁড়িয়ে থাকার জোরটুকু যেন হারিয়ে ফেলল সে।

অনেক কষ্টে অসুস্থ শরীরটাকে টেনে বাড়ীর অদুর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর পাড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকা বয়োবৃদ্ধ একটা অশ্বত্থ গাছে হেলান দিয়ে বসল সাগর সরকার।
চারদিক নির্জন, গাছের একটা পাতাও নড়ছে না। যেন মৃত জনপদ।
শ্রাবন মাস পড়েলও বৃষ্টির কোন নাম গন্ধ নেই। কচুরী পনায় ভর্তি হয়ে নদীতে পানি আছে বলে মনে হচ্ছে না। নদী থেকে একটা পচা গন্ধ এসে নাকে লাগছে। মনে হচ্ছে নদীটা মরে আকাশের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
সাগর সর্ব শ্রান্ত হয়ে নদীর কাছে এসেছে জীবনের অর্থ খুঁজতে!