জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্কদ বিতা 'আকারে নিরাকারে'।

আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:৪৮

আকারে নিরাকারে

 

জীবন বীণা, একতারা ছাড়া আর কিছু না।
যখন ছিন্ন হল সে তার খানা,
বুকের ভিতর বাজত যে সুর, সারা দিনমান
বন্দ হল সে তান, দেখি সমুখে দাঁড়িয়ে স্বর্গযান।

নিল বিদায় সৈনিক পাচ জন
সাথে মন, যা করতো তাদের নিয়ত্রণ।
উবে গেল কোথা, কেউ জানে না সে কথা।

গেল চলে কিছু না বলে, ডাকে না দিয়ে সাড়া
ছিল যেন খুব তাড়া।
এত চেনা, ছিল যে পাচ জনা,
ছিল তারা আর কিছু না, উদ্বায়ী কর্পূর ছাড়া।

সুখের খোঁজে সন্ধ্যা সাঁঝে, ছুটেছি ঘোরের মাঝে
করতে সুখী পঞ্চ মুখী সৈনিকের।
খুশী হয়েছে তারা, খুশীতে ভরেছে মন সারা
কিন্তু সব তা ছিল ক্ষণেকের।

জীবন সায়াহ্নে আজ, ফেলে সব কাজ
দিন শেষে বসিলাম এসে, আনমনে
শুনিলাম তখন আত্মার ক্রন্ধন এ বন্ধনে।

চর্মচক্ষু বুজিল যেই, খুলে গেল সেই দিব্য চক্ষু মম
হেরিলাম যা ছিল এতকাল, মনের আড়ালে।
জাগিল আত্মা ভাঙ্গিল ঘুম, কেটে গেল সব ভ্রম
বুঝিলাম, এতদিন ছিলাম, জড়িয়ে মায়ার জালে।

দিনমান ভরি, যে খেলত কেবল লুকোচুরি
এই দেখি আছে, এই দেখি নেই, চলে গেছে।
দিব্য নয়নে দেখিলাম তাঁরে নিরাকারে!
যে ছিল দাঁড়িয়ে সব সময়ে আমার দ্বারে।

দেখিলাম তারে প্রাণ ভরে, নিরাকার অবয়ে।
আহ কি অপূর্ব, অপরুপ! কি প্রশান্তি আনল বয়ে!

বুঝিলাম শেষে প্রতিক্ষন প্রতিদিন এসে
দাড়াতে তুমি আমার দ্বারে নানান বেশে।
মনে হত মাঝে মাঝে, সকাল সন্ধ্যা সাঁঝে
চিনি আমি তারে, যে আসে আমার দ্বারে।

কিন্তু আজ এখন
পঞ্চ সৈনিক যখন, সাথে ভ্রমে ভরা মন
চুকে সব দায়, নিল চির বিদায়;
দেখিলাম তাঁরে হৃদয় জুড়ায়ে, অন্তরে অন্তরে
যে আমার আমি যার, জন্ম জন্মান্তরে।

বুঝিলাম শেষে মিশে অবিনশ্বরে
আমি তাঁর সে আমার, বিধাতা যা আমিও তা
আকারে নিরাকারে।