জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে রচিত ছন্দ কবিতা 'এ ভবে স্বর্গ তৈরি হবে"।

আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৩, ১১:২৩

এ ভবে স্বর্গ তৈরি হবে

 

ঘরের ভিতর থাকে সবার, নিজস্ব এক ঘর
এক কামরার সে ঘর, সবার একান্ত আপনার।
হোক আপন বা পর, নেই কারো ঢোকার অধিকার
সবার আছে একই ঘর, যা অভিন্ন একাকার।

কেউ ঢুকলে তার ভিতর, ভুলে যায় সব দুনিয়ার খবর
সেখানে কেউ না ছোট না বড়, জীব কিম্বা জড়,
ভিন্নতা নেই কারো ভিতর।

কিছু চিন্তা কিছু স্মৃতি, অনুভব আর অনুভুতি
আছে সব জীবনে, থাকে তা গহীন মনে।
যা বলতে না পারে, অন্য কাহারে অন্য কোনখানে।

সবার মাঝে থাকা, তবু সবাই একা, এ জগতে
কত কর্ম দোড়াদোড়ি, তা নিয়ে কত বাড়াবাড়ি
তবু জীবন শেষে দেখে এসে, হয়নি কিছুই নিজের মতে।

হলে সময়, তা বোঝা যায়, কে পর আর কে আপন
প্রয়োজনে যে কাছে রয়, পড়ে গেলে যে হাত বাড়ায়
সেইতো কেবল আপনজন, বাকি সবাই প্রয়োজন।

প্রয়োজনটা শেষ হলে, পুত্র কন্যা নিজ ভুবনে যায় চলে
থাকে কেবল প্রতিবেশী, অল্প বা সময় বেশী।

রাত্রি যখন হয় যে কালো, বা থাকে যখন দিনের আলো
কালো মেঘে যখন আকাশ ছায়, মনে যখন আসে ভয়,
তখন হয় যদি প্রয়োজন, পাবে না কোন আপনজন
প্রতিবেশীরা বাচানোর পরে, আপনেরা এসে বলে ‘আহারে’!

সংজ্ঞা মতে যারা আপনজন, করে তারা কেবল কর্তব্য পালন
কারো দুঃখ সুখে, যাদের চোখে, অশ্রু বয়
তারাই আপন, তারাই প্রিয়জন, বাধা তারা বিনা সুতায়।

এ ভবে আপন জনেরা সবে, বাধা জনমের সুতোই,
স্বার্থের তোড়ে সে বাধন যায় ছিড়ে, তা শক্ত হোক না যতই।
তবে যা বিনা সুতায় বাঁধা, যায় না ছেড়া তা কোন ছলে
সে বাঁধন মানবতার, সবার একই ঘর, মানব-ধর্ম তাকে বলে।

আপনজন যা করে, তা সব সুতার জেরে, কর্তব্য জ্ঞানে
বাকি সবাই যা দেবে তোমায়, সব তা মনুষ্যত্বের টানে।

সুতার গিটে যা থাকে আটকে, ছেড়ে তা স্বার্থের সংঘাতে।
আর বিনা সুতার বাঁধন, তা আত্মার ধন
কোন মতে, বিবাদ সংঘাত বাধে না তাতে।

মানবতায় যা থাকে বান্ধা, সেটাই খাটি, বাকি সব ধান্ধা,
তা বুঝবে যেদিন সবে,
সেদিন এ ভবে, স্বর্গ তৈরি হবে।