জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'বার্ধক্য'।

আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩:৫৬

বার্ধক্য

 

বার্ধক্য অমোঘ বিধান বিধাতার,
জীবনের শেষ পরীক্ষাগার।
শেষ প্রশ্নপত্র সেই পাবে হাতে,
সে অব্দি যে পারবে যেতে।

দাঁড়িয়ে পাহাড়ের গোড়ায়,
বোঝা কি যায়, কি আছে চুড়ায়!
সবার হয় না সে ভাগ্য,
অতদুর যাওয়ার হয়না সবাই যোগ্য।

জীবনের শেষে, বৃদ্ধ বয়সে এসে,
ইন্দ্রিয়েরা সবাই ক্ষমতা হারায়।
যত যত্ন নাও, যত চিকিৎসা করাও
সময়ের কাছে সব বৈদ্য মিছে, সব শেষ হয়ে যায়।

বলে সবে, মানুষ যবে বৃদ্ধ হবে, হয়ে যাবে শিশুর মত।
তা যদি সত্যি হত, তবে সব ফেলে পিছে যা আছে যত
সবে মিলে, দলে দলে বৃদ্ধ হওয়ার পাল্লায় মত্ত হত।

শিশুর জীবন সেতো আনন্দ আশ্রম, সবই সুন্দর স্বপ্নিল
অর্জনের নেই কোন তাড়া, শ্রম ছাড়া সব কিছু পায় তারা।
বৃদ্ধের জীবন, অতৃপ্তিতে ভরা মন, হিসেবে সব গড়মিল
শিশুর মতই চলে হাটে, অসহায় বটে, তবে যেন মাতৃহারা।

বৃদ্ধ বয়সে মানুষ হয়ে যায়, শারীরিক অসহায়
কাপড় জড়ানো বাশের কাঠামো, কাকতাড়ুয়া ছাড়া কিছু নয়।
বাতাসের জোরে নড়ে চড়ে, একটু ঝড়ে ভেঙ্গে নিচে পড়ে
ছেড়া নষ্ট কাপড়ে পড়ে রয়, যদি কেউ না বদলিয়ে দেয়।

অদম্য মায়ার টানে, সবাই বাচতে চায় এ ভুবনে
তার মানে এই নয়, সবাই বৃদ্ধ হতে চায়।
মানুষ বৃদ্ধ হয়, সেটা ভাগ্য বা দুর্ভাগ্যের কিছু নয়
শুধু গলগ্রহ হওয়া নয়, সব কিছু মুখে তুলে দিতে হয়।

দয়া নির্ভর বলে কাকে!
সাহায্য ছাড়া, দিতে পারে না সাড়া, প্রকৃতির ডাকে!
জ্ঞান আছে তবু দেহে নেই বল, অন্যের সাহায্যই সম্বল।
নিজেকে বোঝা মনে হয়, কত অসহায়, বৃদ্ধ সকল!

হোক না আপন জন, তারাও ধৈর্য রাখবে কতক্ষন!
সব অর্জন ছেড়ে যায়, কাছের সবাই মুখ ফিরায়।
বৃদ্ধেরা যেন শরীরের খাঁচা, কেবল মরার জন্য বাচা!
এ জগতে, বোঝা হয়ে বাচতে? কে চায়!

কেন এসব প্রাপ্তি! আছে কোন যুক্তি!
পৃথিবী যদি হয় শাস্তির আখড়া, তবে বার্ধক্য তার চুড়া।
অন্য কিছু না, মৃত্যুই কেবল শেষ করে সকল দুঃখ বেদনা
বার্ধক্য কি শাস্তি! আর মৃত্যুই কি দেয় জীবন থেকে মুক্তি!

 

 




Read More