জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'কাকতাড়য়া'।

আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:০২

কাকতাড়য়া

 

কে বলেছে মৃত আমি, নেই ক্ষমতা কোন?
এই দেখ না নড়ছি আমি, নিজের জোরে জেনো।

মাথায় পরা টুপি আমার, গায়ে নতুন কটি
পা দুটো মোর ঢাকা থাকে, সেগুলো তো কেউ না দেখে
আমি পরের খেয়ে পরের পায়ে ছুটি।

চাকরি করা কাকতাড়য়া, পায় যে সে মাসোয়ারা
জমিও না তার, না ফসল সারা।
কাক পাখীরা মিছে সবাই, ভয়ে পালাই
যদিও তার নেই কিছু করার বালাই।

কাকতাড়য়া ভিতুর সেরা, সবাই আছে ঘোরে ওরা।
বাধা শেকলে, ঝড় বাদলে ঠাঁই দাড়িয়ে সারাবেলা,
তাইতো থাকে ভরা, ধানে সারা রাজার গোলা।

কাকতাড়য়া পাখি তাড়ায়, মনিবই তার শক্তি যোগায়
সময় গেলেই কাঠামোটা বদলিয়ে দেয়।
মালিক যত সময় মত, জামা টুপি বদল করে
যাতে জ্যান্ত মানুষ দেখায় তারে,
কাক পাখি যেন পালায় ডরে।

বিশ্ব ভরে, সবাই মোরা আছি ঘোরে,
নানা সাজে নানা কাজে, নিজ জগতে সবাই রাজা।
সময় আর গন্ডি ফেরে, আমরা যে’রে সবাই প্রজা।

রাজা হওয়া সবারই সাধ, সেটাই ভ্রান্তি সেটাই প্রমাদ।
সাধ পুরনে প্রতিক্ষণে, দৃষ্টি রেখে বাহির পানে
ছুটছে ধেয়ে পাগল হয়ে, মায়া মরীচিকার পিছে
দিনের শেষে হিসেব কষে, সবই মিথ্যে সবই মিছে।

জীবন সবার, এক কারাগার ঘোর কাটাবার।
এক কয়েদখানা, কেবল কারাপালের আদেশ মানা
সেখানে সবই সঠিক, নেই কোন জিত নেই কোন হার।
ঘোরে থেকে স্বপ্ন দেখে, যার যার মেয়াদ করা পার।

মৃত্যু এসে অবশেষে, ঘোর ভাঙ্গিয়ে ডেকে তোলে
চর্ম চক্ষু বন্দ হলে, দিব্য চক্ষু যায় যে খুলে।

ভাঙলে সে ঘোর ঠিক সময় মত
স্বপ্ন দেখা সব সুখ দুঃখ আকাঙ্খা যত
সব শেষ হয়ে যায়।
বোঝে সবাই, জীবনটা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়।

কত আশা কত চাওয়া, কিছুই তার যায়না পাওয়া।
সে’সব আর কিছু না, সব মৃগতৃষ্ণা কেবল মায়া।

জীবন ভরি কি না করি! ভাবি সবে খুব লড়াইয়া।
কিন্তু দিনের শেষে জীর্ণ বেশে,
সবাই মোরা খাঁচায় ভরা, জামা পরা কাকতাড়য়া।