জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'জীবন'।

আপডেট: ০৪ জানুয়ারী ২০২৩, ১১:৪৭

জীবন

 

স্বর্গ থেকে খসে, অবিনশ্বর আত্মা এসে
বন্দি হয় ইন্দ্রিয়ের খাচায়, স্বর্গীয় সে ধন
শুরু হয় নতুন জীবন।

শরীর হল আত্মার খাঁচা, বন্দীশালা
ইন্দ্রিয়েরা সব দেয় পাহারা সারাবেলা।
আত্মা যেন না দেখে কোন
স্বর্গীয় জ্যোতির মেলা।

বন্দী ফাঁদে আত্মা কাঁদে সারাবেলা সারাক্ষণ
আত্মার সে ক্রন্ধন শুনতে চায় না মন।

মানুষ সারা সৃষ্টির সেরা
সৃষ্টির সব নিয়ন্ত্রণ করে তারা।
প্রভু নিজ করে, মানুষ সৃষ্টি করে নিজ অবয়ে
রেখেছিলেন তিনি তাঁরই স্বর্গীয় আলয়ে।

ভাল আর সুখ ছাড়া
স্বর্গে ছিল না কোন অর্জনের তাড়া।
ভাল-খারাপ বোঝার সে জ্ঞানভার
কাঁধে নিল মানুষ, হল হুশ, হল জন্ম তার।

মনের হল জয়।
হায়! এখন এ দুনিয়ায় মানুষ কত অসহায়,
ভাল না মন্দ ফেরে সবাই দ্বন্দ্ব করে,
মনের দাস সবাই।

ঘুমে রেখে আত্মাকে মন জেগে থাকে সারাক্ষণ
যেন যেতে না চায় ফিরে তাঁর আলয়।

মন হল ছদ্মবেশ আত্মার, তবে আত্মা সে নয়
মনেকে আত্মা ভেবে মানুষ ধোকা খায় সবে
যার আবাস এ ভবে সে স্বর্গীয় হবে
তা কি করে হয়!

স্বর্গতে সব কেবল আলো, সবই সেখানে ভাল
কালোর কোন স্থান নেই সেথা।
দুনিয়া ভরা সব দিয়ে, সাদা কালো মিশিয়ে
ইন্দ্রিয়ের রাজ্য এ সাম্রাজ্য মন হল তার রাজা
সাদা কালো না মিশালে মনের লাগে না মজা।

মন চালক খাঁচার, আর খাঁচা ধারক আত্মার।
মন থাকে সদা নিয়ে লেনদেনের ধাঁধা
আত্মা থাকে নিজ ধ্যানে।
আত্মা আর খাঁচার টানে, মন থাকে মধ্যখানে।

মন উদাস হলে, আত্মা উঁকি ঝুঁকি মারে সব ঠেলে
তাইতো ক্ষণে ক্ষণে ইন্দ্রিয় মনে স্বর্গীয় স্বাদ আনে।
কিন্তু তা ক্ষণস্থায়ী অতি উদ্বায়ী, শেষ হয় খাঁচার টানে।

দেহঘড়ি যেই থেমে যায়, মনের দৌরাত্ব সেই শেষ হয়
আত্মা মুক্তি পায় স্বর্গেতেই ফিরে যায়।
যা চেয়েছে সে সারাক্ষন এ ধরায়, হয় তার জয়।
মৃত্যুই জীবনের জয়গান গায়।