জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে রুপক ছোট গল্প 'জনপদ ও জঙ্গল'।।

আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ১৪:২১

জনপদ ও জঙ্গল

জঙ্গলের সাথে লাগোয়া বেশ প্রশস্ত একটা নদী। এপারে খোলা প্রান্তর যেখানে বছর জুড়ে চাষিরা নানা
ফসলের চাষ করে তার সাথেই লাগোয়া জনপদ, ছায়া ঢাকা উঁচু নিচু পাহাড় আর টিলাই ভরা গ্রাম।
বলা চলে নদীর দুধারে মানুষ আর পশুর বাস।
কোন কোন সময় হিংস্র পশুরা নদী পার হয়ে ক্ষেত খামার আর গ্রামে ঢুকে যেমন কৃষকের গৃহপালিত পশু, এমনকি কালেভদ্রে মানুষও খেয়ে ফেলে। তেমনি মানুষও নদী পার হয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করে মধু, কাঠ ইত্যাদি সংগ্রহ করে আর বন্য হরিণ না অন্যান্য পশুও শিকার করে।
কিন্তু বেকাদায় পড়লে বন্য পশুকে জনপদে মানুষ যেমন বধ করে তেমনি বন্য পশুও জঙ্গলে মানুষ মেরে ভুরি ভোজ করে।
তবে বলাবাহুল্য, অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ যেমন পশুর আক্রমণ থেকে নিজেকে প্রাণে বাঁচিয়ে শরীরে ক্ষত নিয়ে বেচে ফেরে, তেমনি অনেক পশুও তাড়া খেয়ে আহত হয়ে জঙ্গলে ফিরে যায়। এ ধরণের ক্ষতগুলো চোখে দেখা যায় আর সেগুলো সেরে গেলে শরীরে দাগ থেকে যায়।
নদীর দুধারের বাসিন্দা এ দুটি মিথোজীবী গোত্র যে যার অবস্থানে থেকে জীবিকার তাগিদে একে অপরের এলাকায় প্রবেশ করে।

জানোয়ার মানুষরূপী হতে না পারলেও, মানুষ নিজ রুপে থেকেও জানোয়ার হয়ে মনুষ্য সমাজে বসবাস করে। আর সমাজে বসবাসরত মানুষরুপী জানোয়ার প্রতিনিয়ত সমাজের অন্য মানুষকে নিষ্পেষণ আর আঘাত করে যে ক্ষতের সৃষ্টি করে তা সব সময় বাইরে থেকে দেখা যায় না। এ ধরনের মানুষেরা তাদের বুদ্ধি আর সম্পদের জোরে জনপদকে অমানুষের অরণ্যে পরিণত করে।

এমনি এক মানুষরূপী জানোয়ার, পশুরাম মহাজন ওই গ্রামের বাসিন্দা। তার কাছে নিপীড়িত হয়ে দেখা অদেখা অসংখ্য ক্ষত নিয়ে গ্রামের অসহায় মানুষ জীবনাতিপাত করে।
মহাজনের প্রকৃত নাম পশুরাম নয়, তার অচরনে মানুষ তাকে ওই নামেই ডাকে।
তিনি কত টাকার মালিক তা তার নিজের কাছেও অজানা। গ্রামে তার প্রাসাদসম বাড়ী থাকলেও তিনি গ্রামে বসবাস করে না, কালেভদ্রে আসে। তবে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ তার কথা গ্রামের মানুষের মুখে কোন না কোন ভাবে উচ্চারিত হয়।
পশুরাম দরিদ্র গ্রামবাসীদের কাছ থেকে জমি আর ঘরবাড়ী বন্দক রেখে চক্রবৃদ্ধি হারে কড়া সুদে টাকা ধার দিয়ে দিনে দিনে তাদের বাড়ী ঘর জমি জমা সব কিছুর মালিকানা হস্তগত করেছে। বর্তমানে বলতে গেলে গ্রামবাসী সবাই তার দয়ার উপর বেচে আছে। গ্রামের মানুষের জমি আর ঘরবাড়ীর সব কাগজপত্র তার নামে। অর্থাৎ আইন তার পক্ষে।
কিন্তু তিনি গ্রামবাসীকে ভিটে ছাড়া করার মত বোকামী করেনি। এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে ক্ষেত খামারি করার জন্য অন্য কোন খান থেকে মানুষ আনা সম্ভব না, তাই গ্রামবাসীকে তাদের বাড়ী ঘরে থাকতে দেয়ার বিনিময়ে তাদেরকে দিয়েই চাষাবাদ করিয়ে তিনি ফসল নিজ ঘরে তোলেন।
গ্রামবাসীদের সাথে তার চুক্তি হিসেবে জমির উৎপাদিত ফসল থেকে যৎসামান্য চাষিকে দেন যাতে তারা বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে শরীরে বেচে থেকে তার জন্য কাজ করতে পারে।
গ্রামবাসীদের মধ্য থেকে গুটিকতক নীতি বিবর্জিত পদলেহী মানুষকে বাছাই করে মহাজন তাদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছেন। তারা মহাজনের লোক বলে পরিচিত, এরাই গ্রামে মহাজনের অনুগত প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে।
তবে একটা ব্যপারে তিনি গ্রামবাসীদেরকে বিশেষ ছাড় প্রদান করেছেন। তা হল নদীর ওপারে অবস্থিত জঙ্গল থেকে কিছু আনলে তার ভাগ তিনি নেন না, তবে তা থেকে অর্ধেক অংশ মহাজনের প্রতিনিধিদেরকে দিয়ে দিতে হয়। সেটাই প্রতিনিধিদের আয়ের প্রধান উৎস।
পশুরাম ইট পাথরের শহরে মদ জুয়া আর যাবতীয় অনৈতিক কাজে ডুবে থাকেন। এই প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই পশুরাম গ্রামবাসীদের সকল পারিবারিক, সামাজিক ও আর্থিক জীবন নিয়ন্ত্রণ করে।
গ্রামবাসীদের কেউ তার কথা মত কাজ না করলে তার প্রতিনিধিরা তাকে বিচারের জন্য শহরের বাড়ীতে যেতে বাধ্য করে। শহরে পশুরামের কয়েদখানা আছে যা সকলে গুমঘর বলে চেনে। সপ্তাহ খানেক গুমঘরে কেউ আটকে থেকে গ্রামে ফিরলে সে অন্য রকম মানুষে পরিণত হয়। তার হাটা চলার মধ্যে সব হারিয়ে বেচে থাকা নিঃস্ব মানুষের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়।
এ ধরনের গ্রামবাসীদেরকে সবাই গুমঘর ফেরত বলে আখ্যায়িত করে। পশুরামের কয়েদখানায় তাদের সাথে এমন কিছু আচরণ করা হয় যাতে শরীরে কোন ক্ষত দেখা না গেলেও তারা সব হারিয়ে আতঙ্কের মধ্যে জীবন কাটায়।

গ্রামে বসবাসরত মানুষদেরকে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়; অর্ধেকের মত গুমঘর ফেরত, যারা মহাজনের গুমঘর থেকে ফিরে ভিতরে ক্ষত নিয়ে বেচে আছে, বাকি অর্ধেক জঙ্গল ফেরত, যারা জঙ্গল থেকে প্রাণে বেচে শরীরে ক্ষত নিয়ে বেচে আছে। আর গুটিকত মহাজনের বিশেষ অনুগ্রহ প্রাপ্ত পদলেহী প্রতিনিধি বৃন্দ।
এ তিন শ্রেণীর মানুষদেরকে তাদের পোশাক আসাক আর চালচলনে বোঝা যায়।
জঙ্গল ফেরত মানুষ শরীরে ক্ষত দিয়ে দ্বিতীয় জীবন পেয়ে সেটা হারানোর ভয় নিয়ে চারদিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে চলাফেরা করে। কিন্তু গুমঘর ফেরত মানুষ মাথা নিচু করে এমন ভাবে হাটাচলা করে যেন তারা সব হারিয়েছে এখন তাদের আর কোন কিছুই হারানোর নেই।
আর মহাজনের প্রতিনিধি বৃন্দেরা পোশাক আসাক চলাফেরাতে ঝকঝকে চকচকে ঝরঝরা থাকলেও তাদের মধ্যেও প্রচ্ছন্ন ভাবে একটা হারানোর ভয় কাজ করে যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না। -কখন না জানি তাদের কোন কাজ না করে কেবল পদলেহীতার জন্য পাওয়া সুযোগ সুবিধা মহাজন কেড়ে নেয়! তারা পুরোপুরি মহাজনের দয়ার উপর বেচে থাকে।
গ্রামটা প্রকৃত অর্থে মহাজনের দয়ার উপর বেচে থাকা মরা মানুষের হেটে বেড়ানোর গ্রাম।

একদিন নদী পার হয়ে ওই জঙ্গল থেকে শরীরে অসংখ্য পশুর কামড়ের ক্ষত চিহ্ন নিয়ে এক সিদ্ধি পুরুষ আসলো এ গ্রামে। কয়েক যুগ ধরে জঙ্গলে পাহাড়ে প্রকৃতি আর পশুদের সাথে জীবন কাটিয়ে তিনি দিব্যজ্ঞান লাভ করেছেন। ঐশ্বরিক ক্ষমতা বলে তিনি দিব্য চক্ষু দিয়ে সব দেখতে পান যা চর্ম চক্ষু দিয়ে দেখা যায় না।
বাঘের কামড় থেকে জীবনে বাচা মানুষদের ক্ষতের চিহ্ন গুলো সবার মত খালি চোখ তিনিও দেখলেন। কিন্ত যে জিনিষটি অনন্যারা খালি চোখে দেখতে পায় না সেই ঋষি তার দিব্য চক্ষু দিয়ে দেখতে পেলেন, আর তা হল মানুষের ভিতরের অর্থাৎ মনের ক্ষত।
আর বিশেষ যেটা তার দৃষ্টিগোচর হল সেটা প্রতিনিধিদের মনের ভিতর মহাজনের ভয়।
সিদ্ধি পুরুষ গ্রামে একটা আখড়া তৈরির বাসনা ব্যক্ত করলেন।
তার কথা শুনে গ্রামের মানুষ রাত দিন গাঁয়ে খেটে তার জন্য পাহাড়ের উপর একটা আখড়া তৈরি করে দিল।
তিনি বুঝলেন গ্রামের মানুষদের বাঁচানোর জন্য চিকিৎসা মাথা থেকে শুরু করতে হবে অর্থাৎ মহাজন আর তার প্রতিনিধিদের চিকিৎসা প্রথম দরকার।
প্রতিনিধিরাই গ্রামবাসীদের রক্ত শোষণ করার মহাজনের অদেখা নল হিসেবে কাজ করে। রক্ত চোষার জন্য মহাজনের মোটা মোটা নল গুলো এই প্রতিনিধিদের সাথে যুক্ত। আর প্রতিটি প্রতিনিধি তাদের সরু সরু চোষার নল গুলোকে গ্রামবাসীদের সাথে সংযুক্ত করেছে।
উপার্জন না করে ফল ভোগ করার এ এক চোরাবালি, এধরনের পদলেহীদের মধ্যে লোভের সৃষ্টি হয়ে তারা ধীরে ধীরে লোভের চোরাবালিতে আটকে যায়। আর এ ধরণের মানুষদের ভিতর সব সময় হারানোর একটা ভয় কাজ করে কারণ তারা যা পায় সেটা দয়া, উপার্জন নয়। তাই তারা একদিকে যেমন গ্রামবাসীদের উপর মহাজনের সন্তোষটির জন্য বিবেকহীন কাজ করতে দ্বিধা করে না, তেমনি কখন না জানি মহাজন তাদেরকে প্রতিনিধিত্ব থেকে বাদ দিয়ে দেয় সে ভয়ে থাকে।
মানুষকে বদলানোর জন্য কারো উপর নীতি বাক্য কাজ করে, আবার কেউ একটু শাস্তি বা জোর জবরদস্তির কাছে মাথা নত করে। আর এক শ্রেণী থাকে যারা পরিবর্তনের অযোগ্য।
প্রথমত, দিব্য জ্ঞানী ঋষি জঙ্গল ফেরত মানুষদের বেছে নিলেন, এ শ্রেণীর মানুষদের ভিতর এখনো জীবন বাঁচানোর তাগিদ ধিক ধিক করে জ্বলে। তিনি তাদের ভিতরের ক্ষতকে শুশ্রূষা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করলেন। আর তাদেরকে জাগ্রত করে মহাজনের গুটিকতক প্রতিনিধি পরিষদের উপর বল প্রয়োগ করার জন্য প্রস্তুত করলেন। গুমঘর ফেরত শ্রেণী যারা এখনও নীতি বাক্য শোনে, তাদেরকে নিয়মিত তাঁর আখড়ায় আসার ব্যবস্থা করলেন।

দিব্যজ্ঞান লব্ধ ঋষি জঙ্গল ফেরত মানুষদেরকে জাগ্রত করার পর তাদের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে মহাজনের প্রতিনিধিদের উপর বল প্রয়োগ করে গ্রামবাসীদের রক্ত চোষার মহাজনের প্রধান নল থেকে বিযুক্ত করলেন।
মানুষের শরীরে বসে রক্ত চোষার সুখে নিমজ্জিত কোন মশাকে খুব ধৈর্য সহকারে ধীরে ধীরে তার চোষণ নলের দুপাশের চামড়া দুদিকে প্রসারিত করলে প্রাথমিক ভাবে চোষক একটু একটু বুঝতে পারলেও স্বস্তির যায়গা থেকে সরতে চায়না। তারপর আটকে যেয়ে যখন বাচার চেষ্টা করে তখন অনেক দেরী হয়ে রক্তচোষার চোষণ নলটা আটকে যায়। আর তখন ইচ্ছে মত চোষককে শেষ করা যায়।
মহাজনের অবস্থাটা ঠিক সেরকম। যখন প্রথম তার পদলেহিদের চোষা নল ধীরে ধীরে বন্দ হতে লাগলো তখনো সে ক্ষান্ত না দিয়ে চোষার শক্তিটা বাড়িয়ে দিল। সে প্রচেষ্টায় গ্রামে কি হচ্ছে দেখার জন্য সে যখন গ্রামে আসলো। ততো দিনে জঙ্গল ফেরত মানুষের দল পূর্ণ জাগ্রত হয়ে তার সব প্রতিনিধিদেরকে আটক করে ফেলল।
পশুরাম মহাজন গ্রামে আসলে গ্রামবাসী তাকে আটক করে সিদ্ধ পুরুষের আখড়ায় নিয়ে গেল।
সিদ্ধ পুরুষ গুমঘর ফেরত মানুষদেরকে আখড়ার সামনে জড় করে তাদের সামনে করজোড়ে দন্ডায়মান হাত পা বাঁধা মহাজনকে হাজির করল।
কতদিন পর গুমঘর ফেরত লোকগুলো যারা উপর দিকে তাকানোর সব মানসিক জোর হারিয়ে ফেলেছিল তারা একে একে মুখ উঁচু করে মানুষরূপী জানোয়ারের দিকে তাকাল।
তাদের রক্ত চোষা মহাজন পশুরামকে এ অবস্থায় দেখে তারা প্রথমে চমকে উঠলো। কারণ ওই ক্ষমতাবান মহাজনকে এ অবস্থায় আনা যায় সেটা তারা ভয়ে কখনো স্বপ্নেও কল্পনা করেনি।
তাদেরকে হতবাক আর বিহ্বল অবস্থা দেখে ঋষি কি যেন একটা ভাবলেন ক্ষনেকের জন্য।
তিনি বন্দি মহাজনকে একটু দূরে সরিয়ে তাঁর আখড়ার গা ঘেঁসে দাঁড়ানো একটা টিলার উপর দাড় করালেন। তারপর গুমঘর ফেরত মৃতপ্রায় মানুষদেরকে তাদের আশে পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট বড় পাথরের টুকরো পশুরামের দিকে নিক্ষেপ করে তাদের মনের জ্বালা মিটাতে বললেন।
কিন্তু তাদের মধ্যে কোন রকমে প্রাণশক্তির উদ্দ্রেগ করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি উজ্জীবিত জঙ্গল ফেরত লোকদের কয়েকজনকে মহাজনের দিকে ঢিল ছুড়তে বললেন।
তা দেখে ধীরে ধীরে গুমঘর ফেরত মৃতপ্রায় মানুষদের মধ্যে প্রাণ সঞ্চারিত হয়ে উঠতে লাগল। তারা এক এক করে ঢিল ছুড়তে শুরু করল। ঢিল মারতে মারতে এই প্রথম তারা চিৎকার করে কাঁদল আর নানা ভাষায় পশুরামকে গালিগালাজ করল।
পশুরামের গুমঘর ফেরত মানুষের মধ্যে আবেগের প্রবাহ যখন পুরদমে উদ্গিরণ হল তখন ঋষি তাদেরকে ক্ষান্ত করলেন।
তিনি আহত মহাজন পশুরামকে আখড়ার মধ্যে স্থানন্তর করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন।
সব গ্রামবাসীদের জড় করলেন আখড়া পাহাড়ের পাদদেশে।

-পশুরা পশুদের জায়গায় আর মানুষ মানুষের জায়গায় থাকবে। প্রয়োজন মিটাতে এ দুইটি প্রজাতির প্রাণী একে অপরের আবাসভূমিতে যাতায়াতও করবে। তেমনটি প্রভুর ইচ্ছে। এ দুটি অন্যোন্যজীবি প্রানপ্রবাহ যে যার নির্ধারিত জায়গায় অবস্থান করে স্বাভাবিক নিয়মে জীবন চালাবে।
একটু থামলেন তিনি।
-তার মানে এই নয় যে সবাই ভাটার টানে সারাটা জীবন প্রবাহিত করবে। উজানে না গেলে জীবন এগিয়ে যাবে কি করে! তবে উজানের ঢেউয়ের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আর ভালবাসা থাকলে একে অপরের সহায়ক হয়ে জীবন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
সিদ্ধ পুরুষ একটু অন্যমনস্ক হয়ে গেলেন।
ভাবলেন তার বোধহয় যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। তিনি কিছুটা আনত বদনে দাঁড়িয়ে রইলেন।
-মানুষের বাসস্থান নদীর এপারে জনপদে, পশুদের অবস্থান ওপারে জঙ্গলে সেটা বুঝেছি। কিন্তু মানুষরূপী রক্তচোষা পশুদের বাসস্থান কোথায় হবে? আর পশুরাম আর আর প্রতিনিধিদের কি ব্যবস্থা হবে?
গ্রামবাসীদের এ প্রশ্নে সিদ্ধ পুরুষ মুখ উঠিয়ে তাকালেন জন সমুদ্রের দিকে।