জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'স্বর্গীয় আলো'।

আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:৩৮

স্বর্গীয় আলো

 

জনমেই প্রতিরোধী, চাপ তাপ দূরে ঠেলে নিরবধি
নিরেট পাষাণ, আলো বাতাস তাতে ঢুকতে বারণ।
করে সব প্রতিরোধ তা যা কিছুই হোক
এ ভাবেই শুরু পাষাণী জীবন।

তারপর দিনে দিনে চাপ তাপ বাড়ে বহুগুণে
অবশেষে যে করে নিজেকে সমর্পণ,
ঢোকে তাতে আলো, দূর হয় সব কালো
পাথর হয়ে যায় রুহিতন, মনি মুক্তা রতন।

প্রতিরোধী অশ্মরী, জ্বলে পুড়ে যুগ যুগ ধরি
ছাড়ি অভেদ্য আবরণ, হয়ে ওঠে অমূল্য রতন।
সহস্র পাথর ভেঙ্গে চুরে, আনে তাকে বের করে
রাখে তাকে যতনে স্ফটিক কাঁচ ঘরে।

পাষাণ তো পাষাণই আছে, চরিত্রটা কেবল বদলে গেছে
কালো পাথর হয়ে গেছে হীরা।
সবই ঠিক আছে কিছুই না বদলেছে
কেবল আলো প্রতিরোধী থেকে হয়েছে স্বচ্ছ তারা।

সব প্রাণী এক নামে, ছিল স্বর্গীয় আলোর স্বচ্ছ ধামে
কোন লোভ লালসার অন্ধকার ছিল না সেখানে।
শিশু শাবক দিনে দিনে স্বর্গীয় চেতনা ঢেকে শক্ত আবরণে
বাড়িয়েছে অস্বচ্ছতা বহুগুনে
স্বর্গ ভুলে হয়েছে মর্তের রাজা মনে মনে।

সব শিশু, মানব, বিড়াল বা ব্যাঘ্র ছানা
নিরেট পার্থিবতা আর কদর্যতা তখনো তাদের অজানা।
স্বর্গীয় আলো উঁকি ঝুঁকি মারে পাতলা আবরণ ভেদ করে
মানব রুপি দানবকেও তারা কাছে টানে, এ ভুবন ভরে।

পৃথিবীর চাপে তাপে যত দিন যায়
প্রতিরোধী পাষাণ দিনে দিনে স্বচ্ছ হয়।
কিন্তু হায়! দিন দিন মোহ মায়াই ঢেকে যায় মানুষের মন
স্বর্গাগত সব প্রাণ, হয়ে ওঠে আলো প্রতিরোধী পাষাণ।

আলো ঢুকে নিরেট পাষাণ, হয়ে ওঠে অমূল্য ধন।
মোহ মেঘে ঢাকা পড়ে মানুষ, হয়ে যায় যেন বেহুঁশ
স্বর্গীয় আলো তাতে ঢুকতে না পায়
মনের গোলাম হয়ে ভুলে যায় স্বর্গাগত হৃদয়।

সবই ভ্রম মরিচিকা সম, পৃথিবীটা ভরা শুধু মোহ
যা সব সময়, কেবল তৃপ্তি দেয় মন দেহ।
সব ক্ষণস্থায়ী অতি উদ্বায়ী,
সারাক্ষণ হারানোর ভয়ে থাকে মন!

দিবা শেষে সব কিছু অবশেষে
সব সময়, দুঃখ দিয়ে হয় শেষ নিশ্চয়।