জীবন থেকে নেয়া কাহিনী অবলম্বনে রচিত ছোট গল্প 'পার্থিবতার বেড়াজাল'। ।

আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৩, ১৩:০৩

পার্থিবতার বেড়াজাল

 

অনেক দিন পর এবার বাড়ীতে আসা। অনেক দিন মানে প্রায় তিন বছর পর।
বাড়ীটা আমার পিতৃপুরুষের, আমার প্রপিতামহ জমিদার ছিলেন। দাদুর আমল থেকে জমিদারী প্রথা উঠে যায় তবে দাদু এবং পরে আমার বাবা জমিদার বাড়ীটা আর তদসংলগ্ন ভিটে বাড়ীটা পরিপাটি করে রেখেছেন।
লেখাপড়ার জন্য সেই বাল্যকাল থেকে আমি হোস্টেলে হোস্টেলে কাটিয়ে তারপর পছন্দমত একটা কর্মস্থলেই ঘর বাড়ী বানিয়ে জীবন কাটানোর পাকাপাকি বন্দোবস্ত করলাম।
দেশে বিদেশে লেখাপড়া করা কালে কেবলমাত্র লম্বা ছুটিতে বাড়ীতে আসলাম। বাড়ীটা আমার খুব পছন্দের জায়গা। আমার বংশের সব স্মৃতি লুকিয়ে আছে ওই অট্টালিকার প্রতিটি ঘরে আর বাড়ী ঘিরে দাঁড়ানো বিশাল বৃক্ষারাজির সুশীতল ছায়াই।
আমার সব পিতৃপুরুষই বৃক্ষ প্রেমিক ছিলেন বলা চলে, সবার আমলেই দেশ বিদেশের নানা ধরনের গাছ গাছালি তাঁদের মনের মাধুরী মিশিয়ে বপন করে জমিদার বাড়ী ঘিরে থাকা বিশাল জায়গাটাকে বৃক্ষারাজির অভরান্য সৃষ্টি করেছেন।
আমি বাড়ীতে আসলে দাদু আর পরে বাবা আমাকে নিয়ে আমাদের বিশাল অট্টালিকার প্রতিটি কক্ষ আর বাগান ঘুরে ঘুরে দেখাতেন আর সেগুলোর বর্ণনা করতে করতে দিন ফুরিয়ে যেত। তাই এই অট্টালিকার প্রতিটি কক্ষ আর প্রায় দশ একর জায়গার উপর তৈরি বিশাল বনভূমির প্রতিটি গাছের সাথে আমারও স্মৃতি জড়িয়ে আছে।
বিশাল ভিটের এক কোণে মূল বাড়ীর অদূরে নদীর গাঁ ঘেঁসে আমাদের পারিবারিক গোরস্থান, সেখানেই আমার সব পূর্ব পুরুষেরা চির নিদ্রায় শায়িত আছেন। আমারও ইচ্ছে সেখানেই সমাহিত হওয়া।
বছর দশেক হল বাবা মারা গিয়েছেন। বলতে গেলে বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে যাতায়াত একদম কমে গিয়েছে।
ছেলে মেয়ে দুটো বড় হয়ে বিদেশের মাটিতেই নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে সুখে শান্তিতে আছে। ওরা ছোট থাকতে আমি যত বারই আসতাম ততবারই ওদেরকে সাথে করে নিয়ে আসতাম। এ বাড়ী আর ভিটের প্রতি ওদের টানটাও কোন ভাবে কম না। কিন্তু কাজের টানকে অস্বীকার করা বড়ই কঠিন তাই ইচ্ছে থাকলেও ওরা হুট হাট করে আসতে পারে না।
দাদুর আমল থেকেই এ বাড়ীর ভিটেতে তিনটে পরিবার বংশ পরস্পর বসবাস করে। ওদের কেউই এ অঞ্চলের না। সবাই আসাম ত্রিপুরা আর মেঘালয় অঞ্চল থেকে আগত। দাদু ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টে কাজ করতেন আর সে সুবাদেই তার জীবনের অনেকটা সময় ওই অঞ্চলগুলোতে কেটেছে, তখন দাদুই পরিবারগুলোকে এ বিশাল সম্পত্তি দেখাশোনা করার জন্য নিয়ে আসেন।
দাদু ওদের জন্য এ ভাবেই উইল তৈরি করেছেন যে এ সম্পত্তির আয় থেকে তিনটি পরিবার নিয়মিত ভাতা পাবে আর এ সম্পত্তিতে উৎপাদিত ফসল ওরা বিনা পয়সায় ভোগ করবে। কিন্তু কেউ কোনদিন এ সম্পত্তির মালিক হতে পারবে না।
ওদেরই একজন এংলিয়ানা খিসা এ বিরাট এস্টেটের বর্তমান ম্যানেজার। সেই সব দেখাশোনা করে রাখে। বয়স আশি ছাড়িয়েছে, আমার থেকে বছর দশেকের বড়। উইল মোতাবেক আমাদের সম্মতিতে ওই পরিবার থেকেই একজন পরবর্তী ম্যানেজার হবে।
কেন জানি বেশ কিছু দিন ধরে আমি এক অজানা অস্বস্তিতে ভুগছি। হাতে কাজ না থাকলে বোধহয় এমনটা হয়। এটা অনেকটা সাগরের ধার ঘেঁসে দাঁড়ানো পাহাড়ের চুড়া থেকে নেমে আসা ঝরনা ধারার মত। সে ধারা মৃদু শব্দ করে অবিরাম পাহাড় থেকে ঝরে পড়ে সাগরের সাথে মিশে নিঃশেষ হতে থাকে, কিন্তু সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ ভাঙ্গা শব্দের কাছে সে ধ্বনি চাপা পড়ে যায়। বেলাভূমিতে আসা সহস্র মানুষ সাগরের গর্জন আর ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়া চকচকে ফেনার দিকে তাকিয়ে ঝরনার কথা একেবারেই ভুলে যায়।
সাগরকে যদি কিছুক্ষণের জন্য থামিয়ে সব কর্ম তৎপরতা বন্দ রাখা যায় কেবল মাত্র তখনি আদি অনন্ত কাল ধরে কুল কুল শব্দে বয়ে চলা ঝরনার সে শব্দ শোনা যাবে।
আমি এই বার্ধক্যে এসে কর্মচঞ্চল দুনিয়ার কাছে নিজের উপযোগিতা যখন প্রায় শূন্যের কোঠাই পৌঁছলো তখনই আমার পিতৃপুরুষের ভিটেতে অবস্থিত গোরস্থানের পাশ দিয়ে বয়ে চলা শীর্ণ সে নদীর কুল কুল শব্দে বয়ে যাওয়ার শব্দ বুকের মাঝে অনুভব করতে লাগলাম।
এংলিয়ানাকে টেলিফোনে জানিয়ে হটাৎ করেই চলে আসলাম।

মুল বাড়ীটা ফাঁকাই থাকে, এংলিয়ানা নিয়মত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে তালা বন্দ করে রাখে। দাদুর আমলে এখানটা গভীর গ্রাম থাকলেও বর্তমানে উন্নয়নের ধারায় রাস্তা ঘাট আর বিদ্যুতের কল্যাণে এটা মুল শহরের সাথে প্রায় লেগে গিয়েছে। কিন্তু এখনও এখানে নির্জনতা আছে প্রকৃতি আছে।
বাড়ী পৌছাতে প্রায় সন্ধ্যে হয়ে গেল।
আমার মনের গভীরের আকুতি এংলিয়ানা পরিষ্কার বুঝে সে বলল -রাতে আর না বেরিয়ে বিশ্রাম নিয়ে কাল সকালেই না হয় বেরবেন।
এংলিয়ানা জানে বাড়ী আসলে আমি সব ঘুরে ঘুরে দেখার জন্য পাগল হয়ে থাকি।

পাখীর কিচির মিচিরে বেশ সকালেই ঘুম ভাঙ্গল। হাতে মুখে পানি ছিটিয়ে একটু পরিপাটি হয়ে দোতলার বারান্দায় এসে দাড়ালাম।
মার্চ মাস শুরু হয়েছে। ফির ফির করে বাতাস এসে গায়ে মুখে লাগতে লাগলো, সাথে আম লিচুর মুকুলের চেনা গন্ধ চারদিন যেন মৌ মৌ করতে লাগলো।
হটাৎ নজরে পড়লো লম্বা বারান্দার অপর প্রান্তে একটা অল্প বয়সী মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে। বছর দশেক হবে বয়স, ফর্সা গায়ের রং গোলাপি একটা ফ্রক পরনে। এই মুহূর্তে ওকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওকে কোন অপ্সরী বলে ভ্রম হল।
অবাক হওয়া মুখাবয়বে এক দৃষ্টে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে। মেয়েটি কতক্ষণ ওভাবে দাঁড়িয়ে সেটা ঠাওর করতে পারলাম না, আর আমি যে ওর দিকে তাকিয়ে দেখছি সেটা ও টের পেল কিনা সেটা ওর অঙ্গভঙ্গিমায় একদম তা বোঝা গেল না। ওকে মাদাম তুষাদের গড়া মোমের মূর্তির মত মনে হল।
আমিও সেদিকে তাকিয়ে যেন মোহাচ্ছন্ন হয়ে রইলাম।
কতক্ষণ এভাবে তাকিয়ে ছিলাম জানিনা আর কতক্ষণ ওভাবে থাকতাম তাও বলা কঠিন। পিছন থেকে এংলিয়ানার ডাকে সম্বিত ফিরে পেলাম।
পূর্ব পশ্চিম লম্বা আয়তকার বিল্ডিংটার দক্ষিণ মুখী রমগুলোর সামনে পুরোটা জুড়ে প্রশস্ত বারান্দা। দোতলায় উঠার দু প্রান্তে দুটো সিড়ি। আমার পশ্চিম দিকের কোনার ঘরটার অন্য প্রান্তের সিড়ি দিয়ে উঠে মেয়েটা দাঁড়িয়ে।
-বাবু, ও আমার নাতনী, নয়নসোনা। আপনি আসার খবর শোনার পর থেকে আমাকে নানান কথা জিজ্ঞেস করে চলেছে। আমি যতবার এ ঘর বাড়ি পরিষ্কার করার জন্য এখানে এসেছি ও ততবার আমার সাথে এসেছে। ওর কত কৌতূহল কত প্রশ্ন আপনার সম্পর্কে।
এংলিয়ানার কথায় তার দিকে মুখ ঘুরালাম।
-আমার সাথে এসে নয়নসোনা সারা বাড়ী দৌড়াদৌড়ি করে খানিকক্ষণ, উপর নিচ সব ঘর ঘুরে ঘুরে দেখে, মেঝের শ্বেত পাথর, নক্সা করা পালঙ, চেয়ার সব কিছুতে স্পর্শ করে করে অনুভব করে। একদম পাগল মেয়েটা।
এংলিয়ানার কথা শোনার এক ফাঁকে পিছন ফিরে দেখি নয়নসোনা নেই।
যাহোক, এংলিয়ানার সাথে বিভিন্ন কথায় ভিতর নয়নসোনার প্রসঙ্গ চাপা পড়ে গেল।
নাস্তা সেরে এংলিয়ানাকে নিয়ে সব ঘুরে দেখার জন্য বেরলাম।
এ ঘোরাঘুরি শেষ হওয়ার না। বেলা প্রায় মাথার উপর চলে আসলো। এই রোদে এখন আর না ঘুরে এংলিয়ানা আমাকে বাড়ী ফেরার তাগিদ দিল।
কি ভেবে এংলিয়ানাকে বললাম –তুমি যাও আমি নদীর ধারে একটু বসে তারপর ফিরব।
নাক অব্দি পাঁচিল ঘেরা দেয়ালের মাঝে তৈরি প্রশন্ত একটা গেট দিয়ে গোরস্থানে প্রবেশ করলাম। উত্তর দিক মুখ করা গোরস্থানের দক্ষিণ দিক ঘেঁসে নদীটা বয়ে চলেছে। এ অঞ্চলটা যখন জংলা ছিল তখন ঐ নদীই এ অঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা ছিল। সে কারণেই বোধহয় নদীকে বলা প্রকৃতির তৈরি হাইওয়ে।
বর্তমানে এ অঞ্চলে বসতি গড়ে উঠাই অন্য সব কিছু পরিবর্তন হলেও নদীটা তেমনিই আছে। বয়ে চলেছে সব স্মৃতি বহন করে।
গোরস্থানের দুই পাল্লার গেট, ধাক্কা দিতেই ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে খুলে গেল। মনে হল যেন গেটটা শব্দ করে এখানে শায়িত আমার পূর্বপুরুষদের আমার আগমনে বার্তা পৌঁছে দিল।
অনেক গুলো কবর, সবাই আমার অতি আপনজন। কারো কবর তেমন ভাবে চিহ্নিত করা না, কেবল মাত্র আমার পরদাদা, দাদা আর বাবার কবরে সমাধিপ্রস্তর দেয়া। ভাবলাম সবাই যদি বেচে থাকতো তাহলে এ নির্জন প্রান্তর সবার পদভারে কত না আনন্দঘন হয়ে উঠত। মনটা অসহায়ত্তের বেদনায় ব্যথিত হল।
কেন জানি খুব ইচ্ছে হল পাশাপাশি দাঁড়ানো প্রস্তর গুলো স্পর্শ করে দেখার।
প্রস্তরগুলো স্পর্শ করতেই আমার সারা শরীর এক অভূতপূর্ব শিহরণে আন্দোলিত হল। অনেক বিষয় আছে যা কেবল নিজে অনুভব করা যায় এটা তেমনি একটা অনুভূতি। কখন যে অশ্রুতে ঝাপসা হয়ে চোখদুটো বন্দ হয়ে আসলো নিজেই জানিনা।
উপর থেকে একটা পূর্ণ পরিস্ফুটিত শিমুল ফুল ঝরে গায়ে পড়াতে সম্বিত ফিরে পেলাম।
গোরস্থানের মাঝামাঝি জায়গায় হাত পা ছড়িয়ে দাঁড়ানো বিশাল বপুধারী গাছটা। গোরস্থানটা তৈরির সময় আমার পরদাদা যিনি প্রকৃত অর্থে এ সবের স্থপতি তিনিই লাগিয়েছিলেন বলে শুনেছি।
উপরে তাকিয়ে দেখলাম নাম না জানা কয়েকটা পাখী বসে। নিচে লক্ষ্য করলাম অসংখ্য পক্ক আর অপক্ক ফুল পড়ে আছে। ভাবলাম সব ফুল যে পূর্ণ পরিস্ফুটিত হয়ে ফল দিয়ে তারপর ঝরে পড়ে তেমনটি হয় না। নানা কারণে অকালে অনেক ফুল ঝরে পড়ে।
সব ফুলই পূর্ণ বিকশিত হয়ে ফল দান করে ঝরে পড়তে চায়, কিন্তু হায়! সবার ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটে না। কত অসহায় ওরা প্রকৃতির কাছে।
মনটা আফসোসে ভরে গেল।
ঠিক তখনি ডালে বসা একটা পাখী আমার ঠিক মাথার উপর মল ত্যাগ করে একটা ডাক দিয়ে উড়ে চলে গেল।
বিরক্তিতে ভরে গেল মনটা।
নদীর ধার ঘেঁসে বানানো বেশ কয়েকটা সিমেন্টের বেঞ্ছের একটাতে বসলাম নদীর দিকে মুখ করে। এই ভরা দুপুরে নদীতে গাঁ চুবিয়ে আসা মৃদু মন্দ বাতাস এসে চোখে মুখে বুলাতে লাগলো। এই নির্জন দুপুরে নদীর কুল কুল ধ্বনিটা এক অভূতপূর্ব সুর মূর্ছনার আবহ সৃষ্টি করল।
ভাবলাম এখানে সবাই ঘুমিয়ে আছে বলেই প্রকৃতির এ সুর শোনা যাচ্ছে।

-সাহেব, তোমার অত বিশাল বাড়ী, কত সুন্দর করে সাজান গোছানো থাকে সব, কিন্তু কেউ থাকে না কেন সেখানে?
দেখি নয়নসোনা দাঁড়িয়ে অদূরে। ও চুপি চুপি কখন এসে দাড়িয়েছে খেয়াল করিনি। কথা না বললে হয়তো ওর উপস্থিতি টেরই পেতাম না।
ওকে ইশারায় ডেকে আমার পাশে বসতে বললাম।
-দাদুকে কতবার বলেছি, সাহেবকে বল না ও বাড়ীতে আমরা থাকলে কার কি অসুবিধা হয়? কিন্তু দাদু কেন জানি বলেনি কথাটা তোমাকে।
তাকিয়ে দেখতে লাগলাম নয়ন সোনাকে এক দৃষ্টিতে।
একটুকু একটা মেয়ে ফুলের মত নাযুক এখনো, যাকে এখনো পর্যন্ত মানুষের তৈরি বাস্তবতা তেমন ভাবে স্পর্শ করতে পারিনি, ওর উপর এখনো বস্তুগততা ভর করতে পারেনি। এখনো অপার্থিব অশরীরী জগতের সরলতা এবং সৌন্দর্যের আলো ওর ভিতর দিয়ে প্রতিফলিত হচ্ছে।
অশরীরী চেতনাকে শারীরিক চাক্ষুষ বস্তুগত উপস্থিতি সব সময় ছায়াচ্ছন্ন করে রাখে। এর ব্যাতিক্রম পরিলক্ষিত হয়; মানব শিশু, কুকুর ছানা, বিড়াল ছানা, মেষ শাবক ইত্যাদির মধ্যে যারা এখনো কোমল ও দুর্বল, যাদের উপর এখনো বস্তুগততা ভর করতে পারেনি। এখনো অশরীরী জগতের সরলতা এবং সৌন্দর্যের আলো তাদের ভিতর দিয়ে প্রতিফলিত হয়। তাদের এই অপার্থিবতা যে কোন নিরেট অসংবেদনশীল মানুষকেও স্পর্শ করে।
নয়নসোনার এই অপার্থিবতা আমার সব কিছুকেই কেমন জানি এলোমেলো করে দিল। অতবড় বাড়ীটা ফাঁকা পড়ে থাকে, থাকার কেউ নেই। পার্থিব নিয়মে যাদের সেখানে থাকার কথা বাড়ীটা তাদের দরকার নেই। আর নয়নসোনাদের বসবাসের জন্য অমন বাড়ীর প্রয়োজন কিন্তু ওদের থাকার অধিকার নেই।
বাড়ীটা ওভাবেই পড়ে থাকে, সেখানে নয়নসোনারা থাকলে কার কি অসুবিধা? সে প্রশ্নের জবাব আমি প্রকৃতই দিতে পারব না।
তবে নয়ন সোনার দাদু এই এস্টেটের ম্যানেজার এংলিয়ানা কেন সে কথাটা আমাকে বলতে পারেনা সেটার জবাব আমার জানা আছে। কিন্তু সাহস করে কথাটা আমাকে বললে আমি ওদেরকে থাকার অনুমতি দেব কিনা সেটা প্রকৃতই আমার জানা নেই।
আমরা সবাই পার্থিবতার বেড়াজালে শক্ত শেকলে বাঁধা।