জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'শরীরে বন্দিখানা'।

আপডেট: ২২ Jun ২০২৩, ১৪:৩১

শরীরে বন্দিখানা

 


আকারে প্রকারে মানুষ, কম বেশ হোক যে যতই    
ভেদাভেদ কেবল মনে, আকার আয়তনে  
আলাদা রঙ ঢঙ কিন্তু সবাই কুয়োর ব্যাঙ, প্রকৃতই।       
 
একই আকাশ অসীম অনন্ত, কারো শুরু কারো দিগন্ত 
কেউ দেখে সূর্য, কেউ দেখে সৌন্দর্য ভরা চন্দ্র তারা।       
কারো নীলাকাশ সারা, কারো মেঘে ভরা   
কারোটা ভয়ংকর, কারো আবার নেই স্বস্তির অন্ত।      
 
কুয়ো যেটুকু আকাশ দেখায়  
মানুষ সকল সেটুকুই কেবল দেখতে পায়। 
যত মানুষ ততো কুয়োর প্রকার আর পরিসর
 আকাশ যে টুকু দেখা যায়, ভরা ভিন্নতায় সবার।     


কালো মেঘে আকাশ ভরে, ঝড়ে দেয় সব ভেঙ্গে চুরে 
কেউ বলে বটে! এটা ঘটে, বাতাসের ভিন্ন চাপে।       
আর কারো কাছে, এতে কার কি করার আছে?     
ভেবে লাভ নেই মোটে, সব ঘটে বিধাতার অভিশাপে।   


যত মুনি ততো মত, চলে এ বিশ্ব ধরায়।    
এ সব হয় অন্য কারণে নয়, কুয়োর কারসাজি। 
চক্ষু মুদে যা দেখা যায়, সবার বেলাই তা এক হয়
চক্ষু খুললেই সদা সব আলাদা, সব ধোঁকাবাজি।     
 
নিরাকার থেকে আকারে সবে এসেছে এ ভবে একে একে  
করে দিব্য চক্ষু ম্লান, চর্ম চক্ষু করেছে আলান      
ছেড়ে জলাধিপতি, পড়েছে কুয়োতে গোলমেলে অতি।          


তারপর সবে জানে না কে কবে, দিনে দিনে        
কুয়োর ভিতর পড়ে শত কুয়ো গড়ে মনে মনে।   
কুয়ো আর কিছু নয়, কেবল জন্ম দেয় মায়া মোহ   
যত বাড়ে কুয়ো ততো বাড়ে দ্বন্দ্ব কলহ।  
 
থেকে নিজ নিজ আকাশে, দূরত্ব বেড়েছে মানুষে মানুষে 
ভালবাসা বিশ্বাস করিয়া গ্রাস, ভরিছে ভুবন হিংসা বিদ্বেষে।       


যতদিন এ ভবে, আকারে সবে কুয়োতে রবে    
হবে না সুখ রবে উন্মুখ, থাকবে হৃদয় ভরা ক্লান্তি।    
যে যাই করুক, যত গুরু যত মনিষী ধরুক   
কুয়ো থেকে যবে বের না হবে, পাবে নাক প্রশান্তি।     


আকার আর কিছু না, নিচক শরীরে বন্দিখানা     
না ত্যাগী এ ভবকারা, পাবে কি করে মুক্তি সারা! 
থেকে অচির ঘরে, হবে কি করে চিরায়মানা।