জীবন থেকে নেয়া কাহিনী অবলম্বনে রচিত ছোট গল্প 'বিনা সুতোর টান'।

আপডেট: ২৭ Jul ২০২৩, ০৯:৫০

বিনা সুতোর টান

 

এক ছেলে আর তিন মেয়ে নিয়ে সংসার কদর আলী বিশ্বাসের। পর পর দুটো মেয়ের পর ছেলেটার জন্ম। স্বচ্ছল কৃষক পরিবার। ছেলে মেয়েরা গ্রামের স্থানীয় স্কুল থেকে পাশ করে পাশের শহরে কলেজে পড়াশোনা করেছে। বড় দুটো মেয়ে কলেজে পড়তে পড়তে ভাল পাত্রের সাথে বিয়ে হয়ে তারা সুখে শান্তিতে ঘর সংসার করছে।
কদর আলী বিশ্বাসের ছেলে রতন বিশ্বাস শহরের ডিগ্রি কলেজে বিএ শেষ বর্ষের ছাত্র। ছোট বোনটাও ওই একই কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হয়েছে। এমন সময়ে কদর আলী বিশ্বাস মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে মারা গেল।
অসময়ে রতনকে সংসারের হাল ধরতে হল। আর সে জন্য রতন বিএ পাশ করে আর পড়াশোনা না করার সিদ্ধান্ত নিল। রতন বিশ্বাস স্থানীয় সরকারী প্রাইমারি স্কুলে মাস্টারির চাকরী নিল। তার মুল লক্ষ্য বিধবা মাকে দেখাশোনা করা আর ছোট বোনটাকে ভাল কোন পাত্রের সাথে বিয়ে দেয়া।
বোনটা বিএ সেকেন্ড ইয়ারে উঠতেই ভাল পাত্রের সাথে বিয়ে দিয়ে কিছুটা চিন্তা মুক্ত হল রতন।
বর্তমানে মাকে নিয়েই নির্ঝঞ্ঝাট সংসার তার।

রতনের ছোট বোনের সাথে একই কলেজে পড়ত রত্না, ঐ একই গ্রামের বাসিন্দা। রত্নার বাবা স্বচ্ছল ব্যবসায়ী, স্থানীয় বাজারে ওদের নিজস্ব মার্কেট আছে।
দু পরিবারের মধ্যে খুবই সখ্যতা। ওদের বাবারা ভাল বন্ধু। রতনের বাবার আকস্মিক মৃত্যু দুটো পরিবারকে আরো কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। বলতে গেলে রতনের ছোট বোনের বিয়েটা রত্নার বাবাই দায়িত্ব নিয়ে সব কিছু করেছেন।
বিএ পাশ করার পর রত্নাও গ্রামের ওই একই প্রায়মারি স্কুলে মাস্টারির চাকরি নিল। রত্নার বাবা তার বড় মেয়েটাকে বিএ পাশ করিয়ে শহরে ভাল ছেলের সাথে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু তার ইচ্ছে ছোট মেয়েটাকে সরকারী কর্মকর্তা বানাবেন। রত্নাও বেশ উচ্চাভিলাষী, তাই মাস্টারির চাকরি নিলেও সরকারী ক্যাডার সার্ভিসে পরীক্ষা দেয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে সদা ব্যস্ত থাকে।
ছোট বোনের বান্ধবী হিসেবে রত্নার সাথে রতনের ভাব ভালবাসা সেই ছোট কাল থেকেই আর এখন একই স্কুলে চাকরি করার সুবাদে সে সম্পর্কটা আরো গভীর হয়েছে।
বান্ধবীর বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও রত্না আগের মত সুযোগ পেলেই রতনদের বাড়ীতে যাতায়াত করে। রত্না আসলে সে রতনের মা আর রতনের সাথেও ওর রুমে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা গল্প গুজব করে। ছুটির দিন গুলোতে রত্না প্রায় সারাদিনই রতনদের বাড়ীতে কাটায়।
রত্না জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে তার স্বপ্নের কথা রতনকে বলে ওকেও সরকারী ক্যাডার সার্ভিসে পরীক্ষা দেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।
কিন্তু রতন তার অনুরোধে তেমন গা লাগায় না। সে এই গ্রাম আর তার মাকে ছেড়ে দূরে কোথাও যাবে না বলে ওর পরিকল্পনার কথা জানায়।
-তুমি ভাল করে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পাও সেটা আমি চায়। আমার কথা বাদ দাও, আমি যেমন আছি বেশ আছি।
রতনের কথায় রত্না একটু রাগ করলেও হাল ছাড়ে না। কিন্তু রত্নার এ ধরনের অনুরোধে রতন আজকাল অনেকটা মৃদুস্বরে বিরক্তি প্রকাশ করে।

ইতিমধ্যে রত্না ক্যডার সার্ভিসে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছে। রেজাল্টের ব্যাপারে ও খুব আশাবাদী। এ রকম সময়ে রত্নার বাবা একদিন সকালে রতনদের বাড়ীতে আসলেন। তিনি মাঝে মধ্যেই আসেন কিন্তু সেদিন আসলেন রতনের মায়ের সাথে বিশেষ আলাপ করার জন্য।
রত্নার বাবার প্রস্তাব রতনের মা সানন্দে গ্রহন করে ছেলেকে রাজী করাবে বলে তিনি কথা দিলেন।

-মা, রত্না ভাল মেয়ে সেটা মানি কিন্তু আমার সাথে ওর ঠিক খাপ খাবে না।
-কেন? এ কথা বলছিস কেন বাবা?
-মা, রত্না উচ্চাভিলাষী, সেটা খারাপ কিছু না, সে বড় সরকারী অফিসার হয়ে দেশের বিভিন্ন শহরে চাকরি করবে। কিন্তু আমিতো এই গ্রামেই থাকতে চায়।
রতনের মা তেমন কিছু না বুঝে ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ।
-আমি জানি মা, তুমি রত্নাকে খুব পছন্দ কর, আমিও করি কিন্তু স্বামী স্ত্রী হিসাবে আমাদের মধ্যে ঠিক খাপ খাবে না।
-ক্যান বাবা, রত্না যেখানেই চাকরি করুক তুই সেখানে যাবি আর রত্নাও মাঝে মধ্যে আসবে। সমস্যা কোথায়?
সরলা মায়ের সহজ জবাবের কোন উত্তর দিল না রতন।
এরই মধ্যে রত্নার লিখিত পরীক্ষার রেজাল্ট বেরল। সে পাশ করে ভাইভার জন্য প্রস্তুতি নিতে লাগল।
রত্নার বাবা মেয়েটাকে বিয়ে দিয়ে তারপর চাকরিতে পাঠানোর তাগিদটা বেশী করে অনুভব করতে লাগলেন। রত্না চুড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওর চাকরি হয়ে পোস্টিং অর্ডার বেরল।
রত্না চাকরিতে যোগদানের আগে দু পরিবারের সম্মতিতে ধুমধাম করে ওদের বিয়ে হয়ে গেল। বিয়েতে ওদের দুজনের কারোরি আলাদা কোন আগ্রহ না থাকলেও দুই পরিবারের পছন্দে কেউ কোন আপত্তি করলো না।
বিয়ের তিন মাস পর রত্না চাকরিতে জয়েন করল।
রতন আর রত্নার মা বাবা সাথে যেয়ে রত্নার পোস্টিঙের যায়গায় সব গুছিয়ে দিয়ে আসলো।
বিয়ের পর রতন ঘন ঘন ছুটি নিয়ে আর সরকারী লম্বা কোন ছুটি পেলেই তার স্ত্রীর সাথে যেয়ে বসবাস করতে লাগলো।
প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হলেও কিছু দিনের মধ্যে ওরা দুজনেই এডজাস্ট করে নিল।

বছর দুই পর ওদের প্রথম ছেলে সন্তানের জন্ম হল। রতনের মা বৌমার ওখানে যেয়ে থাকতে লাগলেন।
পোতার বয়স ছ মাস হওয়ার কিছু দিন পর রতনের মা বাড়ী ফিরে আসলেন।
ছেলেকে দেখাশোনার জন্য রতনের স্ত্রী একটা কাজের মহিলার ব্যবস্থা করল।
কয়েক মাস পর রতন যখন তার ছেলেকে দেখাশোনা করার জন্য মা’কে ওর বউয়ের ওখানে যেতে বলল, রতনের মা তখন কিছুটা অনিহা প্রকাশ করলেন।
-বাবা, শরীরটা বেশী ভাল লাগছে না, দেখি একটু ভাল হলে না হয় যাব।
মায়ের কথায় রতন তাকাল তার মুখের দিকে। কিন্তু তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।
রতন জানে তার মা পোতা ছেলের জন্য সব সময় উদ্বিগ্ন থাকে, প্রতিদিন রতনকে টেলিফোনে খবর নিতে বলে, সেই মায়ের এ মনোভাব তার মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিলেও মাকে আর কিছুই জিজ্ঞেস করল না।

চাকরিতে সিনিয়র হওয়ার সুবাদে রত্নার ব্যস্ততা বাড়তে থাকল এবং এর মধ্যে বদলিরও আদেশ আসলো।
রত্নার মায়ের শরীর বরাবরই খারাপ থাকে তবু তিনি অনেক কষ্টে কয়েকদিন মেয়ের সাথে থেকে ওর বদলির সব গোজগাজ করে দিয়ে আসলেন।
রতনও সাথে গেল, কিন্তু ওর ছুটি না থাকার কারণে রত্নার জোরালো অনুরোধ না রেখে কয়েক দিন থেকে ওকে চলে আসতে হল।

-তোর কি হয়েছে বাবা, শরীর ঠিক আছে তো, আর বৌমার খবর কি?
এবার ফিরে আসার পর থেকে ছেলের মুখটা মলিন দেখে রতনের মা কথাটা জিজ্ঞেস করলেন।
-না তেমন কিছু না, তোমার অত কিছু চিন্তা করতে হবে না।
ছেলে জবাবটা এড়িয়ে গেল পরিস্কার বুঝলেন তিনি।
এর পর থেকে বৌমা আর পোতার কথা বাড়ীতে আলোচনা প্রায় বন্দই হয়ে গেল।

তারপর অনেক বছর গড়িয়ে গেল। রতন আর রত্নার মা দুজনেই কয়েক মাসের ব্যবধানে মারা গেলেন।
মা মারা গেলে রত্না ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ীতে আসলে রতনের মা তার অসুস্থ শরীর নিয়ে সে বাড়ীতে গেলে দেখা হল পোতা আর বৌমার সাথে। ছেলেটা বেশ বড় হয়ে লাজুক প্রকৃতির হয়েছে, কিছুতেই দাদীর কাছে আসলো না। ওকে ওর মা একটা বোর্ডিং স্কুলে দিয়েছে বলে বলল।
সেটাই ছিল পোতা আর বৌমার সাথে শেষ দেখা।
এর কয়েক মাস পর রতনের মাও মারা গেল। মরার কয়েকদিন আগে পোতাকে দেখার জন্য ছেলেকে তিনি বলেছিলেন দু একবার।

তারপর আরো অনেক বছর কেটে গেল। বাড়িতে একদম একা রতন। মাঝে মাঝে তিন বোনের কেউ না কেউ এসে ভাইটাকে দেখে যায়।
রতন এখন ওই প্রাইমারি স্কুলের হেড মাস্টার। ওর স্কুলের একজন জুনিয়র টিচার, কাজল ওদের পাশের গ্রামে বাড়ী, প্রতিদিন বাড়ী থেকে যাতায়াত করতে কষ্ট হয় তাই রতনের অনুরোধে তারা স্বামী স্ত্রী রতনের বাড়ীতে থাকে। ওরা স্বামী স্ত্রী দুজনের ওই স্কুলের মাস্টার। রতনের ছেলের থেকে কয়েক বছরের ছোট ফুটফুটে একটা মেয়ে আছে ওদের।
প্রকৃত ওরাই দেখাশোনা করে রতনকে।
ওদের মেয়েটা রতনকে বড় বাবা বলে ডাকে। ওভাবে কে ওকে ডাকতে শিখিয়েছে কে জানে? তবে বাচ্চাটার সে ডাক রতনের মন প্রাণ জুড়িয়ে দেয়।

রতন চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর গত কয়েক বছর থেকে বাড়িতেই আছে। ইদানিং শরীরটা একদম ভাল যাচ্ছে না ওর। ডাক্তার দেখাতে রতনের একদম অনীহা। শরীরের এ অবস্থায় কাজল আর ওর স্ত্রীই ওর একমাত্র সাথি।
ওদের মেয়েটা এইচ এস সি পাশ করেছে। মেয়েকে কলেজে ভর্তি করানোর জন্য সেদিন ওরা দুজনেই শহরে গেছে। সন্ধ্যা প্রায় গড়িয়ে গেল তবুও ওরা কেউ ফিরছে না। বোধহয় ঝড় বৃষ্টিতে আটকে আছে।
সকাল থেকেই আকাশ কালো মেঘে ঢেকে সব গুমোট হয়ে আছে আর অঝরে বৃষ্টি ঝরছে। রতন ঘরের বারান্দায় ইজি চেয়ারে গাটা এলিয়ে দিয়ে বসে। গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে, চোখের দু কোনা বয়ে এমনিতেই অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।
ভীষণ পিপাসা লেগেছে, গলা একদম শুখিয়ে গিয়েছে, কিন্তু উঠে পানি খাবে সে জোর টুকুও নেই।
আজ ছেলেটার কথা খুব মনে পড়ছে রতনের। রত্না ছেলেকে কি বলেছে সে জানে না, তবে ছেলেটা ওর টেলিফোন ধরে না। শুনেছে ছেলেটা এরই মধ্যে ডাক্তারি পাশ করে চাকরিতে যোগ দিয়েছে।

রতন সেদিন রিতিমত চমকে উঠেছিল যেদিন রত্না তার প্রায়মারি স্কুলের চাকরির সামাজিক মর্যাদা, ভবিষ্যৎ ইত্যাদি উল্লেখ করে তাকে ওই নগন্য স্কুলের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে দেখাশোনার ভার নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।
-তোমার সামান্য প্রায়মারি স্কুলের চাকরি, ওটা না করলে কি এসে যাবে? আর ভেবে দেখ, ছেলে বড় হলে তার বাবার পরিচয় দিতেও দ্বিধা বোধ করবে। এখনো ও ছোট, বড় হলে তোমার এ চাকরির কথা ওর মনে থাকবে না। তুমি বরং চাকরিটা ছেড়ে দাও।
রতন সেদিন রত্নার কথায় নির্বাক হয়ে ছিল কিছুক্ষণ। অযথা তার সাথে তর্ক না করে ছেলেকে একটু আদর করে চলে এসেছিল। সেটাই ছিল রত্নার সাথে ওর শেষ কথাবার্তা।
সে সব কথা নতুন করে মনে পড়ছে আজ।
রতনের মা কেন ওর বৌয়ের ওখানে দ্বিতীয় বার যেতে চাইলো না, সেদিন তা মাকে জিজ্ঞেস করার সাহস হয়নি রতনের। তারপর আর সেটা নিয়ে ভেবে দেখার চেষ্টাও করিনি কখনো।

-দেখেন স্যার, শহর থেকে কাকে ধরে নিয়ে এসেছি। আপনার চিকিৎসার আর কোন ত্রুটি হবে না। আপনার ছেলে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার।
কথাটা ক্ষীণ স্বরে রতনের কানে ঢুকলেও চোখ মেলে তাকানোর কোন তাড়না অনুভব করল না আর সে শক্তিও যেন শেষ হয়ে গেল।

মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ নিয়েই চলতে হয়, জীবন চালাতে হয়। সমাজের চাওয়া পাওয়া আর অনুশাসনের কাছে নতি স্বীকার করেই জীবনকে এগিয়ে নিতে হয় প্রতিটি মানুষের।
রতন আর রত্নার বিয়ে হল তাদের বাবা মায়ের পছন্দে। রতন নিজের ছোট্ট ভুবনে তুষ্ট চিত্তে বসবাস করতে চাইলেও স্ত্রীর বর্তমান সামাজিক মর্যাদার সাথে দিনে দিনে তা বেমানান হয়ে উঠল। রতনের সহজ সরল মা’ও সে পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হয়ে নিজেকে একেবারে গুটিয়ে নিয়েছিল।
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কটা সামাজিক সুতোই বাধা, যেটা দৃশ্যমান। রতন আর তার স্ত্রী রত্না সামাজিক মর্যাদার মাপকাঠির দুই প্রান্তের বাসিন্দা হয়ে আলাদা আলাদা ভাবে অবস্থান করলেও সামাজিক বন্ধনের সুতোর টানে স্বামী স্ত্রী হয়ে রইল।
কিন্তু সন্তানের সাথে সম্পর্কের বাঁধনটা বিনা সুতোর, যেটা দেখা যায় না, অনুভবে থাকে হৃদয়ে হৃদয়ে, তাই সে বন্ধন ছেঁড়ার নয়। টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে যেতে পারে কিন্তু সেটা কখনো ছেঁড়ে না।
তাদের একমাত্র ছেলে সামাজিকতার বিচারে উচ্চ আসনে আসীন মায়ের উচ্চ সামাজিক মর্যাদার দেখা যাওয়া সুতোর টানে বাবার সাথে বিনা সুতোর টানটা অগ্রাহ্য করল ঠিকই, কিন্তু সে টানটা রয়েই গেল।

সে টান অবশেষে ছেলেকে মৃত্যু পথযাত্রী বাবার কাছে নিয়ে আসলো ঠিকই, কিন্তু জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা সৃষ্টি হওয়া বাবাকে সে কতটুকু আরোগ্য করতে পারবে সেটা বলা কঠিন।
নিম্নচাপে সৃষ্ট জোয়ারে সময় সমুদ্রের ঢেউ এসে শান্ত নদীকে অশান্ত করে সব ওলট পালট করে দিয়ে নদীর নগন্যতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর পর ভাটির টানে ফিরে যায় ঠিকই, কিন্ত কোন ভাবেই নদী আর আগের মত থাকে না।