জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'একই প্রাণ, সওয়ার একই স্বর্গীয় যান'।

আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ১১:২৩


একই প্রাণ, সওয়ার একই স্বর্গীয় যান।

 

যে দিকে যা কিছু দেখি, মেলে এ দুটি আঁখি
মরু, সবুজ বা সমুদ্র, হোক তা বৃহৎ অথবা ক্ষুদ্র;
সবই এ ধরায়, মনে হয় শেষ হয় দিগন্ত রেখায়
যেখানে দেখা যায়, আকাশ আর মাটির মিলন হয়।

দেখারই মত, ভাবনা যত, তারও থাকে দিগন্ত সীমানা।
সীমার ওপার যা কিছু আছে, সবে ভাবে সব তা মিছে
অজ্ঞেয়বাদীরা করে মানা, অতো শত সম্ভব না জানা।

দেখা বা অদেখা, বিধাতার এ ভুবনে,
সব তা আরো যা, আসেনি এখনো জ্ঞানে
সবই তার, সৃষ্টি বিধাতার, অসীম অন্তহীন।
যা কিছু প্রকৃতি, স্থির বা গতি,
সবই তাঁর অধীন, দিগন্ত বিহীন।

এ ভুবনে, মনে হয় মানুষের জ্ঞানে, সব হয়ে যাবে শেষ,
কিন্তু এ ধরায়, সব রুপ বদলায়, কিছুই হয় না নিঃশেষ।

যা কিছু হয় মনে, সে সবই কেবল ইন্দ্রিয় জ্ঞানে
দেখে যা মনে হয় দিগন্ত, প্রকৃতই তা অসীম অনন্ত।
সবই মরিচিকা, কেবলই প্রহেলিকা সম
তা কেবল দেখার আর ভাবনার ভ্রম।

দেখে দিগন্ত মনে হয় অন্ত, কিন্তু সব তা, ইন্দ্রিয়ের অসাড়তা
ইন্দ্রিয়ের কাজ মানে, সসীমের জ্ঞানে অসীমকে বাধা;
আর কিছু না, সব কিছুতেই দিগন্ত টানা, সব তা ধাঁধা।
এতসব হায়, আর কিছু নয়, কেবলই মনুষ্য দুর্বলতা।

ভালবাসা সার্বজনীন দিগন্তবিহীন, বিধাতার অন্য নাম
নয় নেয়া, শুধু দেয়া, না নিয়ে কোন দাম।
যে ভালবাসা দিগন্তে শেষ হয়, সেটা প্রকৃত ভালবাসা নয়।

যদি থাকে মনুষ্যত্বতার, সীমা পরিসীমার বাদ বিচার
তবে তা মনুষ্যত্বতা নয়, কোন গোত্র গোষ্ঠীর সাথে অন্বয়।

এ ধরণী ঘিরে যে বাতাস, অংশুমালী, অসীম আকাশ
সব কিছু তার, সৃষ্টি একই স্রষ্টার, তাই তা সবার
জাত ধর্ম গোষ্ঠী, সবই তাঁরই সৃষ্টি, নেই কোন বাদ বিচার।

বিধাতার ভালবাসা বিধাতার দান
সবার জন্য তা সমান সমান।
সবাইকে তা করিছে সেবা, সম আদরে অকাতরে
তাইতো যাকিছু বিধাতার, সবই তার চিরন্তন চিরতরে।

যদি কোন আস্তিকের হায়, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়
কোন নাস্তিক তা দেখে, যদি তার মুখে মুখ রেখে,
তাড়াতাড়ি করে, নিজ অক্সিজেন ঢুকায় ফুঁৎকারে;
আস্তিক নাস্তিক নহে, মানুষের পরিচয়ে দেহ থেকে দেহে,
সে বাতাস গ্রহন করে, জাত পাট ধর্ম বর্ণ বাদ বিচারে।

সাদা কাল নির্বিশেষে, সব দেহে তিনি আছেন বসে
ধুঁক ধুঁক করে করিছে তান, স্বয়ং বিধাতা মহান
সবাই একই প্রাণ, সওয়ার একই স্বর্গীয় যান।