জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'সমুখে মোহনা'।

আপডেট: ১৬ Jun ২০২৪, ১২:০১

সমুখে মোহনা!

ডুবিছে দিনমণি, ক্লান্ত আমি বাহিয়া দাড় খানি
ভাঙ্গা তরী, অর্জনে হয়েছে ভারী,
আজি এ সায়াহ্নে ডুবিবে বুঝি নিয়ে সবটা।

বহিছে বাতাস,করে ফুসফাস সমান তালে,
তরী মোর হেলিছে বড়জোর, একটুও নাহি চলে,
সময়ের ভারে দিয়েছে শতছিন্ন করে বাওটা।

আজি এই ক্ষণে, কেমন যেন করিছে মনে,
হেরিয়া সমুখে মোহনা!
বুঝি আর দেরী নাই, ঘনিয়া আসিছে সময়
দেখা যায় অদূরে, বেলাভূমি ঘিরে সাদা সাদা ফেনা।

জোয়ারের লহর, ভাঙ্গিছে পর পর
যেন উঁচু নিচু পর্বত বহর।
উঠা আর নামা, সুখ দুঃখ বেদনা
কেবল শেষটা সত্য, বাকি সব অনিত্য স্থায়ী না।

ভাঙ্গিল দাড় শত, ক্লান্ত হয়েছে বাহুদ্বয় কত।
ছিড়েছে পাল, তবুও ছাড়িনি হাল,
ডাকে মোরে ঐ অদূরে, ওই ধোঁয়াশা দিগন্ত।
মন ভরা আশা, উপরে আকাশ ভরসা, অসীম অনন্ত।

ভাবি সদা, আঁধার কাটিয়া হবে সাদা, আসিবে দিন,
করিবে জীবন মন কতনা রঙ্গিন।

পড়িছে বেলা হেলে,
জলের তোড়ে, উঠিছে নড়বড়ে নাউখানি দুলে।
ছেঁড়া পাল ভাঙ্গা হাল, নাওয়ের অবস্থা বেহাল
হয়েছে ফুটো শত, আর কত!
ভরিছে জল করে কল কল।

জীবন কেবলই মায়া, প্রহেলিকা ছায়া
ফুরালে সময় সব শেষ হয়, দিয়ে দুঃখ জ্বালা!
গড়িয়েছে বেলা, এবার ফেরার পালা।

পড়ে রল যা, সব তা মরিচিকা, সব ফাঁকি
নিঃশেষ হতে, মুক্তি পেতে শুধু বাকি।

করেছি কত যতন, সাধ্য মতন
নাওখানি মোর, জীবন ভর।
শেষে আমার, সময়ের কাছে বুঝি হল হার!

জল মাটি দিয়ে গড়া, এতকাল ছিলাম মাতৃ ছাড়া
এবার হল মোর ফেরার পালা।
ফিরিব জলে, মায়ের কোলে
ফেলে সব ভব খেলা।