জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে কবিতা 'জীবন'।

আপডেট: ১৮ Jul ২০২২, ১৪:৩০

এরই নাম জীবন!

 

জীবন আর মৃত্যু দিনভরি খেলিছে যেন লুকোচুরি
জীবন চলিছে মৃত্যুর পিছে, কখনো দূরে কখনো কাছে।

ভাল খাবার ভাল ডাক্তার, ভাল কাপড় ভাল ঘর
মৃত্যুকে কি রুখতে পারে, ঠেলতে পারে দূরে!

অভাব টাকার, না পারে দেখাতে ডাক্তার
দুবেলা পেট ভরে ভাত জোটে না যার।
তবুও তারা বাচে শত বছর।

টাকার নেই অভাব, ডাক্তার দেখানো কেবল স্বভাব
পোলাও কোর্মা খায় দুবেলা সবাই
তবুও তো যখন তখন তারাও মরে সারাক্ষণ।

বিধাতা দিয়েছে দেহ
দিয়েছে তাতে যত আকাঙ্ক্ষা যত মোহ।

দেহের যত্ন নিলে, হাত পা চোখ সবাই মিলে
দেবে তোমাকে তৃপ্তি।
আর যত্ন না নিলে দেবে যন্ত্রণা তিলে তিলে
পাবে না কেউ কোন স্বস্তি।

এ ধরা অসমতায় ভরা, পার্থিব বিচারে
কারো পেট বড় ক্ষুধা বেশী, তবু ভরা থাকে দিবানিশি
কারো পেট ছোট তবু না ভরে, কষ্ট পায় ক্ষুধার কাতরে।

সবাই এ ধরায় কর্মফল পায় কানায় কানায়।
ভরা পেট বেশী ভরে গেলে যেমন বদহজম হয়
খালি পেট যদি বেশী খালি হয়, নিজে নিজের চর্বি পিত্ত খায়।

বিধাতার এ ধরাধাম, নেই কোন সুখ বা দুঃখ অবিরাম
এসব প্রাপ্তি, পুরষ্কার না শাস্তি!

পৃথিবীর কথা থাক, পুরষ্কার বা শাস্তি যে যাই পাক!
জীবনের শেষ মৃত্যু দিয়ে, সেখানে যাবে সবে কিছু না নিয়ে।
যেমনি সবে এসেছিল এ ভবে কিছু না নিয়ে সাথে
তেমনি যায় চলে সব ছেড়ে খালি হাতে।

চোখের দেখায় মরলেই সব শেষ হয়, যত অসমতা সব দূর হয়
মাটি বুঝে নেয় পূর্ণ হিসাব, যা কিছু দেয়েছে ফিরিয়ে নেয় সব।
ঊর্ধ্বাকাশে আত্মা যায় চলে, কোন ঠিকানে না বলে!
সবে খুঁজে পায় যে যার আলয়।

তবুও প্রশ্ন জাগে, সব কি শেষ হয় আত্মার দেহ ত্যাগে!
সবে বলে মৃত্যু হলে, প্রাণ পাখীটা যায় উড়ে চলে।
পাখীটা দেখতে কেমন! কিভাবে করে সে ভ্রমন!
কোথায় ছিল আগে, আর যায় কোথায় দেহ ত্যাগে!

জীবন অন্য কিছু নয় আর, যেন ঊর্ধ্বে ছুড়ে দেয়া কয়েন বিধাতার
উপরে ওঠা যেখানে শেষ, সেখানে নতুন জীবনের উন্মেষ।
তারপর থেকে শুরু, সারাক্ষণ বুক করে দুরু দুরু
মাটিতে পড়ার প্রতিযোগিতা, আগে বা পিছে পার্থক্য এই যা।

মাটিতে পড়ার যাত্রায়, বার বার সুখ আর দুঃখ পাশ বদলায়।
যে যত উপরে যাবে, পড়ার আগে তত বেশী ঘূর্ণন খাবে
অবশেষে পড়বে সবে মুখ থুবড়ে এ মাটির ভবে।

প্রকৃতির যত ধাঁধা যত বাধা, সব তার করে অতিক্রম
মাটিতে পড়বে শেষে, ধপ করে অবশেষে, এরই নাম জীবন!