জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'সমাজপতি ও বজ্রদন্ড'।

আপডেট: ২৫ অগাস্ট ২০২২, ১৬:৩৪

সমাজপতি ও বজ্রদণ্ড

 

আলুলায়িত লম্বা কেশ ভারী, অমুণ্ডিত শ্মশ্রু ধারী
বোবা বধির স্মৃতি বিসৃত, অঘটনের কাণ্ডারি যত।
সাক্ষাৎ শয়তানের অবয়, দাঁড়িয়ে আছে কাঠগড়ায়।

যার যার এতকাল, শয়তান দেখার হয়নি কপাল
কেবল শুনেছে লোক মুখে,
আজ স্বার্থক কর নিজেকে, দেখে নিজ চোখে।

আনত মস্তকে দণ্ডায়মান, যেন বিমূর্ত শয়তান
খাঁটি পাপাত্মার অবতার।
উদভ্রান্ত দৃষ্টি, নিকৃষ্ট সৃষ্টি বিধাতার
চোখ মুখ নির্ঘুম নিশাচর।

চেয়ে দেখ আপাদমস্তক, ভিতর বাহির যাই হোক
পুরোটাই পাপ, যেন বিষধর সাপ
ভরা পঙ্কিলতায়, অন্য কিছু নয়।
এদের নির্মমতায়, আজ সমাজ এত অসহায়।
সমাজের ব্যাধি, দাগী অপরাধী
দাঁড়িয়ে বিচারের কাঠগড়ায়।

অনেকে বলে,
বিত্তশালী বলবান যারা আজন্ম ভাগ্যবান,
সে সব নেতারা মিলে,
আসামী আর সাক্ষীর বংশ, করেছে মূক স্মৃতিভ্রংশ
ছলে বলে কলে কৌশলে।

বললেই কি হয়, সাক্ষী প্রমান থাকা চায়!
আইনের কাছে বিচারের আছে দায়।

সাক্ষীরা সব মূক, বলবে না কিছু ফেটে গেলেও বুক
চোখ থাকতেও কানা, কান থাকতেও শোনেনা
লোকে বলে তাদের আছে সবই জানা,
তবু বলবে না, আছে গড ফাদারের মানা।

সে যা হোক, যা বলে বলুক লোক।
এত সব আইন বোঝেনা
কালো কাপড়ে বাধা চোখ, অত সব দেখতে মানা।
ও খুনি, অপরাধী ওর সব কাজে
তাই ঠাই নেই ওর মুক্ত সমাজে।

সমাজপতি সদাশয় অতি, রক্ষা করে সমাজ
তাকে দেয়া সুরক্ষা সমাজেরই কাজ।
নেতাকে রক্ষা করে যারা তারা তো বীর
ধারে না ধার তাদের নিজের ক্ষতির।

নেতাকে বাচাতে কেউ অপরাধী হলে
নেতা দেবে তারে ঠেলে, নিষ্ঠুর ভাবে ফেলে!
তা কখনো হয়! জননেতা অত নির্দয় নয়।

নেতা জীবন ভরে, নিবেদিত প্রাণ সকলের তরে
কিছু ভুল তার হতেই পারে।
উন্নতি করতে দেশ, নেতার আদেশ নির্দেশ
সবে করবে পালন, জীবন মরণ নির্বিশেষ।

সমাজপতির পথ কণ্টকাকীর্ণ রবে, তা কি করে হবে?
কর্মী যদি মরে সমাজের কাজে
তার সাজা খাটা কি নেতার সাজে?
মানুষের কাজ করতে হলে,
নেতার পথ কুসুমাস্তীর্ণ রাখতে হবে, ছলে বলে।

নেতার সৃষ্টি দিনে দিনে, সমাজেরই প্রয়োজনে।
তার কাছে শত ঋণ, জমা হয়ে আছে দিন দিন
সময় হলেই, শুধিতে হবে তা জনে জনে।
সমাজপতি হিসেবী অতি, ঠিক বুঝে নেবে তা একদিন।

সে নেতার রক্ষাকবজ, সরল সহজ, এক বজ্রদণ্ড,
সমাজের চোখে এক ভন্ড।
দাঁড়িয়ে কাঠগড়ায়, নেতাকে বাঁচানো তার দায়।
নেতার আবিষ্কার অনন্য, নেতাকে বাচিয়ে সে ধন্য।