জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'মরিচিকা'।

আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫:৫১

মরিচিকা

 

তৃষিত মন, ছুটছে আজীবন,
সকাল সন্ধ্যা সাঁঝে, বালিয়াড়ির মাঝে।
চারদিক শুধু বালু ধুধু, কোথা নেই কিছু, শূন্যতা শুধু।
সারা দিন ভরে দেখা যায় দূরে, জল টলমল করে
যাও যত কাছে, দেখা যায় আছে,
কেবলি সরে যায় দূরে দূরে।

কৃষ্ণ কালো রাতের আঁধার,
সব গিলে ঢেকে ফেলে চারধার।
সব ঝোপঝাড় বালি জল,
রেখেছিল যা পথিককে করে মাতাল।
সব মৃগতৃষ্ণা মায়া ভরপুর,
উবে যায় যেন উদ্বায়ী কর্পূর।

পথিকের মন ভ্রমে ভরে,
হারাল কি সব চিরতরে, তাহলে!
আদেউ জানে কি কেউ?
ছিল কি সেগুলো কোন কালে!

দিনের আলোতে সব উজ্জ্বল,
দেখা যাই টলমলে জল
মনে হয় বোধহয়, এ বুঝি ফল, চেষ্টার ফসল।

চকচকে আলোর নিচে,
সব দেখা যায় মনে হয় সব আছে।
আঁধার নামে যখন, সন্ধেহে ভরে মন,
মনে হয় সব মিছে।

পথিক ছোটে সকাল সন্ধ্যে,
যেন সামনে মুলো বাধা, পিছনে হাটে গাধা তার গন্ধে।
আজ পাব কাল পাব বলে, কত রাত দিন গেল চলে।
নতুন সূর্য নতুন ঊষা, যে আশা জাগায় মনে
রাতের আঁধার সব ঢেকে দেয় তার,
আঘাত পায় প্রতিজনে।

সারা দিন কাটে, ভেবে এই পাব বটে,
সবই আছে নাগালের কাছে।
কিন্তু যেই হয় আঁধার, যেন রাজ্য গোলকধাঁধার,
করে দেয় সব মিছে।

কত আশা কত কথা, শেষে নিশ্চিত না পাওয়ার ব্যাথা
এই অজানা অচেনা ধরায়, আমরা সবাই, তৃষিত পথিক
এসব কিছু না, মায়াই অন্ধ মনের ভাবনা,
এটাই জীবন সঠিক।

পাব পাব বলে, জীবন কাটে ডুবে থেকে ভুলে।
তারপর একদিন শেষে, ভিখারির বেশে,
ফেলে সব মরিচিকা ধরা খেলা, ডুবে যায় বেলা
একে একে সব যায় চলে, কাউকে কিছু না বলে।