জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'মানবতার ধর্ম'।

আপডেট: ২৬ Jun ২০২৩, ০৯:৫২

মানবতার ধর্ম

 

মানুষ সবে, এ জগৎ ভবে
কে আপন আর কে পর, তা ভাবার কালে
প্রচলিত সংজ্ঞা মেনে চলে।

বাবা মা’র অমূল্য ধন, নিজ সন্তান
সবার থেকে আপন, যেন নিজ প্রাণ।
জন্মে একই উদরে, ভাই বোনের ভিতরে যে টান
ভাবে সবে থাকবে তা চির অম্লান।

পৈত্রিক সম্পত্তি ঠিকঠাক না পেলে, সহোদরেরা সব মিলে
অধিকার আদায়ের তরে বাবাকেও কয়েদ করে, দরকার হলে।

বাবা গেলে মারা, সন্তান কেঁদে কেটে হয় সারা
তারপর দিনে দিনে জীবিকার টানে, স্বাভাবিক হয় তারা।
পরে ধীরে ধীরে বোঝে সবে কেউ এ ভবে, চিরজীবী না,
আর তাই বাবাও তার, নয় চিরায়মানা।

আপন হারানোর দুঃখ ভোলা, এটা নিচক জাগতিক খেলা,
সেটা আর কিছু নয়, সব ঠিক হয় গেলে কিছু সময়।
কিন্তু বাবার সম্পত্তি! তা মূল্যবান অতি
সহোদর সহমত সেটা ভুললে কুপোকাত, চরম ক্ষতি!

ছেলেমেয়ে ভাবে, ভালবাসবে না বাবা? তা কি করে হবে!
বাবার ভালবাসা পাওনা ছাড়া বেশী কিছু না, এ জগৎ ভবে।
বাবার সম্পদ সেতো অধিকার বোধ, জন্ম দেয়ার ঋণ শোধ
অর্জনের নেই তাড়া, বাবা কি যায় হওয়া সন্তান ছাড়া?

সন্তান মা বাবার উপর, সহোদরেরা একে অন্যের উপর
প্রতিবেশী বন্ধুরাও অন্যায় করে, নিজ স্বার্থে উদ্ধারে।
করে সবে অন্যায়, তবে আপন পর ভেদে নয়
অভিন্ন উদ্দেশ্যে, আপন পর নির্বিশেষে -সুবিধা আদায়।

এ দুনিয়াই করে বড় অন্যায়, যার সাথে আছে অন্তরঙ্গ অন্বয়
উপকারের বেলায় কম বেশী একই রকম হয়।
অপরের তরে মানুষ যা কিছু করে, ন্যায় অন্যায়
সবই তা করে ভেবে নিজেরে, আপন পর ভেদে নয়।

পড়ে থাকা কোন খাদে, অচেনা জনের আর্তনাদে
যদি তৎক্ষণাৎ না ভেবে জাত পাত, তোমার হৃদয় কাঁদে!
সেটা হৃদয়ের স্পন্দন, মানুষে মানুষে টান, জন্মের বন্ধন
জেন, আপন পর বোধ বা ঋণ শোধ, কাজ করেনি কোন।

মানুষের প্রয়োজনে, হৃদয়ের টানে সেবা করে যে জনে
সেটাই মানুষের পরিচয়, তাই মানুষ শ্রেষ্ঠ এ ধয়ায়।
মানুষ আমরা, সৃষ্টির সেরা, এ ধরায় বিধাতার অবতার।
জীবে দয়া প্রকৃত মানুষের কর্ম, সেটাই ধর্ম মানবতার।