জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'দিঠি'।

আপডেট: ০১ Jun ২০২৩, ১৪:২০

দিঠি

এ অজ্ঞাত চরাচর, জগত সংসার যার
এখানে কেউ ভৃত্য কেউ ভূপতি, এ সব কীর্তি তাঁর।
তিনি প্রভু এ ভবে, আমরা প্রেষ্য সবে,
আছে জানা, শুধু তাঁকেই মানা সবার কাজ
তিনি রাজার রাজা, রাজাধিরাজ।

তাঁরই এ ধরা, আকাশ বাতাস সারা
এ ধরা তাঁরই রাজকারা, সব রাজা প্রজার ভবকারা।

তাঁর রাজ্যে সবাই সমান, সবার প্রতি তিনি সম যত্নবান
ভিন্নতা যা দেখি তা কেবল আকার, পার্থক্য নেই আত্মার।
আত্মা ও দেহ, নিরাকার আকার সহ, একত্রে বসবাস
এটা আকারের আবাস, ভিন্ন আকারে অভিন্নের বাস।

একই জল করে টলমল, নদীতে সাগরে
সাগরের জল লোনা, মানুষ তা পান করে না।
কিন্তু সে জলে, সহস্র প্রাণী থাকে চলে
মিঠা জলে যারা বাচতে পারে না।

একের কাছে বিস্বাদ যা, অপরের অমৃত তা
একের পছন্দ, অন্যের জন্য তা ভাল বা মন্দ।
একের সাথে অন্যের মতে মিল হয় না বলে
সেটা ঠিক নয়, সে কথা কি বলা চলে?

মানুষ যা জানে, তা কেবল জন্ম আর মৃত্যুর মাঝখানে।
আগে কে কোথায় ছিল, কি ছিল সে ভুবনে!
মৃত্যুর পর কি হয়! কে কোথায় যায়?
সে সব অজ্ঞেয়, নিশ্চিত জানা সম্ভব নয়।

খাঁড়ি আর সাগরের জল শুষে নেয় সকল অংশুমালী
এটা তাঁর খেলা না, করে না তা খালি খালি!
উপর রাজ্যে বিধাতার, সব জল হয়ে একাকার
ফিরে আসে শেষে এ ভুবনে, সবার প্রয়োজনে
সম ভাগ পায় সব ক্ষুদ্র নালী, নদ নদী ঊর্মিমালী।

রাজা প্রজা সকল আকারে কেবল, এপারের ঠিকানা
কোথা থেকে এসে, কোথা যায় শেষে! তা কেউ জানেনা।
আকারে বসবাস যত বেলা থাকে শ্বাস, সবই বৈষম্য।
নিরাকারে বসতি অসীম অতি, যা আগের ঠিকানা পরের গম্য।

আসার পর আর যাওয়ার আগে, মাঝের ভাগে এ সময়
বিধাতা দিয়েছে আকার, যা এখানে দরকার।
যা কিছু সব তার প্রয়োজন এপার
ওপারে সব তা তুচ্ছ অযথা, সব অপচয়।

ওপারে সব নিরাকার, থাকবেনা কোন আকার
থাকবে না শরীর মন, থাকবেনা কোন প্রয়োজন।
দেহ মন এপারের ধন, কলুষিত হয় নানা কারণ
স্থান নেই ওপার, ধুলিকনা সম পঙ্কিলতার।

আসার আগে আর যাওয়ার পর
সবারই একই আকার, সব নিরাকার।
নিবাসে যেতে আবাসী হতে, লাগে কি চিঠি চৌপাঠি!
সেটাই সত্য সেটাই গন্তব্য, সেটাই সবার দিঠি।